সিপিএমকে তুলোধোনো করে বিপ্লব মানিক সরকারও কমিউনিস্ট নন!!

 সিপিএমকে তুলোধোনো করে বিপ্লব মানিক সরকারও কমিউনিস্ট নন!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-এই রাজ্যে যে কৃষ্টি সংস্কৃতি ঐতিহ্য ছিল, তা দীর্ঘ কমিউনিস্ট শাসনকালে হারিয়ে গিয়েছিল। রাজ্যে বামেদের শাসন কালে ঘরে ঘরে লেনিন, স্ট্যালিনের ছবি ঝুলিতে রাখতে হতো। ২০১৮ সালে রাজ্যে কমিউনিস্ট সরকারের পতনের পর, মানুষের চিন্তায়, চেতনায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। রাজ্যবাসী ধীরে ধীরে তাদের হারিয়ে যাওয়া কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, পরম্পরা ফিরে পেতে থাকে। গোটা বিশ্বে ভারতবর্ষ আজ বিশেষ স্থানে দাঁড়িয়ে আছে।বিশ্বের পঞ্চম অর্থনীতির দেশ এখন ভারত। আর এটা সম্ভব হয়েছে দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদির মতো দূরদর্শী এবং বলিষ্ঠ নেতা থাকার কারণে। বক্তা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব।শনিবার কুমারঘাট পূর্ত দপ্তরের মাঠে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী প্রথম পৌষ মেলার উদ্বোধন করে এই কথাগুলি বলেন শ্রীদেব।
পাবিয়াছড়া বিধানসভার বিধায়ক ভগবান চন্দ্র দাসের উদ্যোগে প্রথম এই পৌষ মেলার আয়োজন করা হয়। শনিবার মেলার উদ্বোধন করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপি প্রদেশ সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য,মেলা কমিটির চেয়ারম্যান বিধায়ক ভগবান দাস সহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাংসদ শ্রী দেব আরও বলেন, ভারতবর্ষ হলো আধ্যাত্মিক দেশ।জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া,উত্তর কোরিয়া এই দেশগুলির পরিচয় হচ্ছে টেকনোলজিতে। টেকনোলজির জন্য গোটা পৃথিবীর মানুষ এই দেশগুলিকে জানে।ভারতেও টেকনোলজি রয়েছে। তার পরেও ভারতবর্ষকে পৃথিবীর মানুষ আধ্যাত্মিক দেশ হিসাবে জানে।এই দেশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের জন্যই আজ দেশ একসাথে আছে।এইদেশের মানুষ তাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি পরম্পরা মেনে চলে। কিন্তু কমিউনিস্টরা তা মানতে চায় না। এই রাজ্যে কমিউনিস্ট দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর শাসন করে গিয়েছে।কমিউনিস্টের শাসনকালে এই রাজ্যের জনগণ তাদের কৃষ্টি সংস্কৃতি ভুলে গিয়েছি।কমিউনিস্ট শাসনে রাজ্যের ঘরে ঘরে লেনিন স্ট্যালিনের ছবি লাগাতে বাধ্য ছিল।কিন্তু ২০১৮ সালে রাজ্যের মানুষ পরিবর্তন ঘটায়। কমিউনিস্টদের বিদায় জানায়। মানুষ তার কৃষ্টি সংস্কৃতি পুনরায় ফিরিয়ে পেয়েছে। রাজ্যের মানুষ কমিউনিস্ট ভুলে গিয়েছে।
এই রাজ্যে এখন কমিউনিস্ট নেই। এখন মানিক সরকারও কমিউনিস্ট নন। তিনি বলেন, আগের সরকারের আমলে সব কিছু ঠিক হতো পার্টি অফিসে।কোন ব্যক্তি বাড়িতে কোন কাজ করতে চাইলও পার্টি অফিসের অনুমোদন লাগত। কিন্তু এই সরকারের আমলে রাজ্যের মানুষ এটা থেকে মুক্তি পেয়েছে।
এদিন সাংসদ শ্রীদেব আরও বলেন, এই সরকারের আমলে রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে।বাম আমলে কুমারঘাট থেকে আগরতলা যেতে পাঁচ ঘন্টা সময়
লাগতো। আর এই সরকারের আমলে জাতীয় সড়কের উন্নয়ন হবার কারণে এখন কুমারঘাট থেকে আগরতলা যেতে দুই ঘন্টার মাত্র সময় লাগে। বর্তমানে রাজ্যে থেকে বেশ কয়েকটি দুরপাল্লার রেল গাড়ি চলাচল করছে। আর তার জন্য কোন আন্দোলন করতে হয়নি রাজ্যের মানুষকে। এই সরকারের আমলে রাজ্যের মানুষের গড় আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বামফ্রন্টের শেষ পাঁচ বছরে মানুষের আয় ছিল এক লক্ষ টাকা। কিন্তু বর্তমানে রাজ্যের মানুষের সেই আয় বৃদ্ধি পেয়েছে হয়েছে এক লক্ষ সাতাত্তর হাজার টাকা। যা পশ্চিমবঙ্গ থেকেও বেশি।
এদিন তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতবর্ষ এগিয়ে যাচ্ছে। নরেন্দ্র মোদি সারা দেশে একাশি কোটি জনগণকে প্রতিমাসে ফ্রিতে পাঁচ কেজি করে চাল দিচ্ছে। বামফ্রন্ট দীর্ঘদিন এই রাজ্যে শাসন করলে তারা কোনও দিন রাজ্যের মানুষকে এক কেজি চালও ফ্রিতে দেয়নি। এই সরকারের আমলে ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আগের সরকারের আমলে ২.৫ শতাংশ ঘরে জল দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু বর্তমানে প্রায় ৭৭ শতাংশ ঘরে জলের সংযোগ পৌঁছে গিয়েছে।
এদিনের পৌষ মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রাজ্যে সভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ রাখেন মেলা কমিটির চেয়ারম্যান তথা এই বিধানসভার বিধায়ক ভগবান চন্দ্র দাস। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঊনকোটি জেলা পরিষদের সভাপতি অমলেন্দু দাস, ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক দীলিপ কুমার চাকমা, কুমারঘাট মহকুমার মহকুমাশাসক এন এস চাকমা। পৌষ মেলাতে ৪৬ টি স্টল খোলা হয়। স্বসহায়ক গোষ্ঠিরা এই মেলাতে পিঠেপুলির স্টল খোলে। তিনদিনব্যাপী এই মেলাতে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। থাকবে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ। মেলা প্রাঙ্গণকে গ্রাম বাংলার রূপে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.