বিভৎস ট্রেন দুর্ঘটনা, ছিটকে গেল চলন্ত তিনটি মালগাড়ির কামরা!!
পার্কিং ব্যবস্থা নেই স্মার্ট সিটিতে, চরম ভোগান্তি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলায় নেই বাইক, স্কুটি, গাড়ির পার্কিং ব্যবস্থা অথচ স্মার্টসিটির প্রচারে ব্যস্ত রাজ্য সরকার। ভূ-ভারতে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম একমাত্র এই শহর। যে শহরে প্রত্যেকদিন নতুন নতুন শপিং মল, রেস্তোরাঁ, সহ ফ্ল্যাট বাড়ি, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সূচনা হচ্ছে। তবে নেই পার্কিং ব্যবস্থা। যার খেসারত দিচ্ছেন রাজধানী আগরতলার লক্ষাধিক সাধারণ মানুষ। এমনকী এই পার্কিং ব্যবস্থা গড়ে না ওঠার সম্পূর্ণ দায় রাজ্য সরকারের হলেও উল্টো আরক্ষা দপ্তরের রোষানলে পড়ছেন রাজধানীর সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার জন্য পকেট কাটছে সাধারণ মানুষের। আর সাধারণ মানুষের এই পকেট কাটা অর্থে ভরছে সরকারের কোষাগার। পার্কিং ব্যবস্থা না থাকার পরও কীভাবে স্মার্ট সিটির প্রচার হচ্ছে? এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। আগরতলার লেক চৌমুহনী বাজার এর উজ্জ্বল নিদর্শন। প্রত্যেকদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই বাজারে উপচে পড়া ভিড় থাকে। তবে বাজারে আগতদের জন্য নেই পার্কিং ব্যবস্থা। তাই সাধারণ মানুষ তাদের বাইক, স্কুটি, গাড়ি, আস্তাবল ব্রিজ সংলগ্ন, রাধানগর ব্রিজে এবং বাজারে মূল রাস্তায় পার্কিং করছেন। ফলে প্রত্যেকদিন হচ্ছে যানজট। উল্টো আরক্ষা দপ্তর ব্যস্ত সে থাকছে ফাইন সংগ্রহে। রাজধানীর মহারাজগঞ্জ বাজারের আরও বেহাল দশা। রাজ্যের এই প্রধান বাজারে পর্যন্ত পার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যর্থ রাজ্য সরকার। তাই নেতাজী চৌমুহনী থেকে এমবিবি ক্লাব, রামঠাকুর সংঘ, গ্র্যান্ডিউজ ক্লাব থেকে সম্পূর্ণ সেন্ট্রাল রোড, মহারাজগঞ্জ বাজারের সম্পূর্ণ এলাকা জুড়ে চলছে যত্রতত্র পার্কিং। তাই এক ঘন্টার কাজ পাঁচ ঘন্টায়ও শেষ হচ্ছে না। একই হাল বটতলা, দুর্গা চৌমুহনী, মঠ চৌমুহনী বাজারের। যেহেতু সাধারণ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি, তাই সাধারণ মানুষকে বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর গাড়ি, স্কুটি, বাইক পার্কিং করতে হচ্ছে। এর পরিনামে রাজধানী বাসীকে মোটা অঙ্কের ফাইন দিতে হচ্ছে।
রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডে, শকুন্তলা রোডে, হরিগঙ্গা বসাক রোডে, মন্ত্রী রোড, দুর্গা চৌমুহনী, সহ সম্পূর্ণ রাজধানীতে গড়ে উঠেছে বহুজাতিক শপিং মল, অত্যাধুনিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলিতেও নেই পার্কিং ব্যবস্থা। ফলে বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষ বাইক, স্কুটি, গাড়ি পার্কিং করছেন রাস্তায়। একই হাল রাজধানীর হকার্স কর্ণারের।
অবাক করার বিষয় হলো, রাজধানী আগরতলার একটি ব্যাঙ্কেরও নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা নেই। আর যেসব ব্যাঙ্ক এবং শপিং মলের নির্দিষ্ট পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে, তাও প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। পরিস্থিতি এমন জায়গায় এসে ঠেকেছে যে নিজেদের কর্মীদের পর্যন্ত পার্কিং-এর স্থান দিতে ব্যর্থ ব্যাঙ্ক এবং শপিং মল কর্তৃপক্ষ। রাজধানী আগরতলার কর্ণেল চৌমুহনীর এসবিআই (টিএলএ) ব্রাঞ্চ, অভয়নগরস্থিত ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রধান কার্যালয়, সেন্ট্রাল রোডের ইউকো ব্যাঙ্ক, কামান চৌমুহনির ব্যাঙ্ক অব বরোদা, হরিগঙ্গা বসাক রোডের পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, এসবিআই মেলারমাঠ ব্রাঞ্চ, এসবিআই শ্যামলী বাজার ব্রাঞ্চ, বোধজং বয়েজ স্কুল সংলগ্ন কানাড়া ব্যাঙ্ক, এসবিআইর বাণিজ্যিক শাখা (জগন্নাথবাড়ি রোড) রাজধানীর আরও বিভিন্ন স্থানের অধিকাংশ ব্যাঙ্কের পার্কিং ব্যবস্থা নেই। যার ফলে প্রত্যেকদিন বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। ফলে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে রাস্তায় একপাশে তাদের বাইক, স্কুটি, গাড়ি পার্কিং করছেন। রাজধানীর পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যে, আদালতে আইনজীবীরা পর্যন্ত গাড়ি, বাইক, স্কুটি পার্কিং সঠিকভাবে করতে পারছেন না। একই হাল রাজধানীর প্রধান দুটি হাসপাতালের, এমনকী প্রত্যেকটি সরকারী অফিসে পর্যন্ত পার্কিং-এর সঠিক ব্যবস্থা নেই। এর উজ্জ্বল নিদর্শন হল রাজ্যের মহাকরণ। ফলে একদিকে মানুষের পকেট কাটছে আরক্ষা দপ্তর, অন্যদিকে প্রত্যেকদিন বাড়ছে বাইক স্কুটি, চুরির ঘটনা। আগরতলা পুর নিগমের পার্কিং ব্যবস্থা থাকলেও তা রাজধানীর সাধারণ মানুষের কোন কাজেই আসছে না বলে অভিযোগ। তাই সাধারণ মানুষের ক্ষোভ চরমে উঠেছে।