বিভৎস ট্রেন দুর্ঘটনা, ছিটকে গেল চলন্ত তিনটি মালগাড়ির কামরা!!
ছদ্মবেশী পরীক্ষার্থী।।।

কী সাংঘাতিক ঘটনা।প্রক্সি পরীক্ষার্থী। তাও আবার চাকরির পরীক্ষায়।রাজ্যে এই ধরনের ঘটনা সম্ভবত প্রথম। উত্তরপ্রদেশ, বিহারে এই ধরনের ঘটনা আকছার শোনা যায়। গত বছর সর্বভারতীয় মেডিকেল এন্ট্রান্স পরীক্ষায় যে অনিয়ম হয়েছিল তাও সকলের জানা। সুপ্রিম কোর্ট প্রায় ২৪ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নষ্ট হবে ভেবে এ যাত্রায় বেশি কড়া পদক্ষেপ নেয়নি। না হলে গত বছর মেডিকেল এন্ট্রান্স পরীক্ষায় যে ধরনের জালিয়াতি হয়েছে তাও ছিল নজিরবিহীন ঘটনা। এই চক্রেরও মূল পাণ্ডারা ছড়িয়েছিটিয়ে ছিল হরিয়ানা, রাজস্থান, বিহার, গুজরাটের মতো রাজ্যে।
এবার ত্রিপুরায়ও চাকরির পরীক্ষা দিতে এসে গিয়ে ধরা পড়লো ৭প্রতারক। এরা আবার অন্যের পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন। কী সাংঘাতিক ঘটনা। বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে এই ধরনের ঘটনার কথা আমরা প্রায়শই পত্রপত্রিকা মারফত জানতে পারি। খবরে প্রকাশ পায়। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলডিসি এবং মাল্টি টাস্কিং স্টাফ পরীক্ষা দিতে তারা রাজ্যে এসেছিলেন।কত বড় র্যাকেট দেশের বুকে রয়েছে তা এই ঘটনা থেকেই বোঝা যায়। একের পরীক্ষা আরেকজন দিয়ে দিচ্ছে। বিনিময়ে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়। তদন্ত করলে নিশ্চয়ই তা বেরিয়ে যাবে।
একসময় বিহারে এই ধরনের ঘটনা শোনা যেত। মাধ্যমিক পরীক্ষা, দ্বাদশ পরীক্ষা, এমনকী মেডিকেল, ইঞ্জিনীয়ারিং পরীক্ষায়ও গণহারে নকল হতো এবং তাও হতো অভিনব কায়দায়। পরীক্ষা হলের বাইরে তাঁবু খাটিয়ে মাইক নিয়ে বসে থাকতো চক্রীরা, আর ভেতরে পরীক্ষা হচ্ছে। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই প্রশ্নপত্র বাইরে চলে এসে গেল। এরপর মাইকযোগে তা চক্রীদের মাধ্যমে পৌঁছে যেত পরীক্ষা হলের। এভাবে চলতো পরীক্ষা। বিহারে এই ধরনের পরীক্ষা পদ্ধতি চালু ছিল। ফলে যে কেউ ডাক্তারি, ইঞ্জিনীয়ারিং কিংবা উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য বিহার, কানপুর, নাগপুরের মতো জায়গায় ছুটে যেত। ওই সমস্ত জায়গায় এমন ব্যবস্থাও ছিল যে বাড়িতেই সার্টিফিকেট চলে আসতো পাসের। পরীক্ষাও দিতে হবে না। শুধু টাকা বিনিময় করলেই সার্টিফিকেট বাড়িতে এসে হাজির। এবার চাকরির পরীক্ষায়ও এদের রমরমা চালু হয়েছে। এর মূলে রয়েছে কোচিং কারবারিরা। গত বছর নিট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় যে অনিয়ম ধরা পড়েছে এগুলির উৎসও ছিল সেই কোচিং সেন্টারগুলি। রাজস্থান, হরিয়ানা, গুজরাটের মতো রাজ্যের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা কোচিং সেন্টারগুলি আদতে দুর্নীতির আঁতুড়ঘর।
তারাই রাজ্যে রাজ্যে কিংবা সর্বভারতীয় স্তরে পরীক্ষাগুলির বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণ করে এরপর একটি র্যাকেট তৈরি করে। টাকার বিনিময়ে এই সমস্ত র্যাকেটরা সক্রিয় হয়ে উঠে। ত্রিপুরা রাজ্যের ক্ষেত্রে এটি ব্যতিক্রমী ঘটনা হতে পারে। চিন্তা করলে অবাক হতে হয় প্রতারকরা সুদূর হরিয়ানা, রাজস্থান থেকে এসে চাকরির পরীক্ষায় বসেছে ত্রিপুরায় এসে অন্যের হয়ে। নিশ্চয় এতে বিশাল অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়েছে বা এই ধরনের কিছুর ডিল হয়েছে। কিন্তু প্রতারকদের কপাল মন্দ। ত্রিপুরার মতো রাজ্যে এসে তারা ধরা পড়ে যাবে তা হয়তো তারা কল্পনাও করতে পারেনি। যে পরীক্ষকরা তাদের পাকড়াও করেছে তাদের নাকি তারা হুমকি,ধমকিও দিয়েছে।
বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো এই কালচার কি তাহলে এ রাজ্যেও আমদানি হলো? উত্তরপ্রদেশে পরীক্ষার আগেই চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্র লিক হয়ে যায়। এই যাবতীয় অভিযোগ ভুরি ভুরি রয়েছে। কিছুদিন আগে ত্রিপুরায়ও এডিসি প্রশাসনের অধীনে চাকরি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র লিক হয়ে গেছিল।
পরবর্তী সময় তা বাতিল হয়ে যায়। সুতরাং চাকরির দুনিয়ায় এই ধরনের চক্রী বা র্যাকেট আগেও ছিল, বর্তমানে রয়েছে এমনক আগামীদিনেও থাকবে। এখন তো চক্রীরা প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে প্রতারণা করছে। সুতরাং সরকারকে এ নিয়ে গভীরভাবে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। ভবিষ্যতে এই সমস্ত ঘটনা রুখতে কড়া আইন কিংবা কড়া পদক্ষেপ নেওয়া একান্ত জরুরি।