ত্রিপুরার সাহিত্য চর্চায় নয়া ইতিহাস রচনা করেছে উড়ান: জয় গোস্বামী।।
ট্রাম্প বোমায় ব্যাকফুটে বন্ধু!

মার্কিন অনুদান নিয়ে ট্রাম্পের একের পর এক। মাঘি বিস্ফোরক মন্তব্য ঘিরে ভারতীয় রাজনীতিতে চাপানউতোর এখন তুঙ্গে।ট্রাম্পের এই ধরনের মন্তব্যে কখনও বিরোধী দল ব্যাকফুটে, আবার কখনও শাসকদল ব্যাকফুটে। এক কথায় এক অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন অনুদান প্রসঙ্গে শনিবার ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। যে কারণে শাসকদল বিজেপি এবার দোলাচলে পড়ে যায়। মার্কিন অনুদান নিয়ে ট্রাম্প গত ক’দিন ধরেই নানা মন্তব্য এবং অভিযোগ উত্থাপন করে চলেছেন। আর সেই অভিযোগের অভিঘাতে কংগ্রেস কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে পড়ে যায়। কেননা, ট্রাম্পের ওইসব মন্তব্যের পরই বিজেপি খড়গহস্ত হয় বিরোধী কংগ্রেসের উপর। বিজেপি অভিযোগ তুলে বলে, কংগ্রেস ওই বিপুল অনুদান মার্কিন প্রশাসন থেকে পেয়েছে মোদি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। বিজেপির এই আক্রমণে কংগ্রেস দল যখন বেকায়দায়, তখন পাশা বদলে যেতে বেশি সময় লাগলো না। কারণ শনিবার হঠাৎ ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি বলে দিলেন, ‘মার্কিন অনুদান প্রাপকের নাম নরেন্দ্র মোদি’! ব্যাস আর যায় কোথায়! স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেস এই সুযোগ কাজে লাগাতে বিন্দুমাত্র দেরি করেনি। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলে দিলেন, মোদিজীর এখন চুপ থাকলে চলবে না। তাঁর নাকি ঘনিষ্ঠ বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্প। সুতরাং এবার সেই বন্ধুর সঙ্গে মোদিজি কথা বলুন। তাঁকে (ট্রাম্পকে) প্রশ্ন করুন যে,এমন এক বিস্ফোরক কথা কেনবললেন তিনি? মোদিজী ভারতবাসীকে জানান যে, এই অভিযোগ কতটা সত্যি? টাকা যে এসেছে সেটা তো মোদি সরকারই উদ্বেগ প্রকাশ করে স্পষ্টীকরণ করেছে।ফলে এখন বড় চাপে পড়েছে মোদি সরকার।
এখন প্রশ্ন উঠছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য কি নিছক অভিযোগ? নাকি এর পিছনে গভীর কোনও রাজনীতি এবং কূটনীতি রয়েছে? ক্রমেই গোটা বিষয়টি রহস্যে পরিণত হচ্ছে। কেননা, মার্কিন অনুদান নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো একটির পর একটি বিস্ফোরক মন্তব্য করে চলেছেন। যা এককথায় বেনজির। এই প্রসঙ্গে গত শনিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গভর্নরদের সম্মেলনে ট্রাম্প সবথেকে শক্তিশালী বোমাটি ফাটিয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহল। ওই সম্মেলনে ট্রাম্পের দ্ব্যর্থহীন মন্তব্য, ‘১৮২ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে আমার বন্ধু, ভারতের মোদিকেই’। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এর আগে গত দুদিন ধরে ট্রাম্পের মন্তব্য ঘিরে বিজেপি বলে চলেছে, ‘ওই টাকা কংগ্রেস পেয়েছে’।
কিন্তু ৪৮ ঘন্টা যেতে না যেতে বন্ধু ট্রাম্প যে মোদি ও বিজেপিকে এইভাবে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেবেন, তা ভুলেও কেউ অনুমান করতে পারেনি। অনেকে বলছেন, ট্রাম্পের এই পাল্টি খাওয়া মন্তব্যে গেরুয়া শিবিরের পালে জোর একটা ধাক্কা লেগেছে। কংগ্রেস কিন্তু দাবি করেছে, ২০১২ সালে ঠিক এভাবেই আন্না হাজারের আন্দোলনে এসেছিল বিজেপি অনুদান। এর সুফল পেয়েছেন দু’জন- কেজরিওয়াল এবং মোদি। বিদেশ থেকে অনুদান এলে সব জানতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সুতরাং তথ্য আছে। ফলে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক বিজেপি। এদিকে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, এ রকম কোনও সরকারী অনুদান প্রকল্পই নাকি নেই! আবার প্রেসিডেন্ট স্বয়ং নির্দিষ্ট অঙ্ক উল্লেখ করে একের পর এক বোমা ফাটিয়ে চলেছেন। স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন অনুদান নিয়ে ক্রমেই সংশয়ের জাল এবং রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের এই বিস্ফোরক মন্তব্যের পর শনিবারই দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়া বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে সাংবাদিকরা এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রাম্পের প্রশাসনের আধিকারিকরা কিছু তথ্য প্রকাশ করছেন এবং অবশ্যই তা উদ্বেগের। আমার মনে হয়, একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির জন্য কিছু মানুষ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। একটি দেশের ক্ষমতাসীন সরকার হিসাবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সত্যি প্রকাশ্যে আসবেই। ফলে চাপানউতোর এখন তুঙ্গে।
তবে মার্কিন অনুদান ইস্যুতে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে যেভাবে রাজনৈতিক পাশা বদল হয়ে অভিযোগের তীর পদ্ম শিবিরের দিকে ধাবিত হয়েছে, তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শুধু তাই নয়, চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়ে যায় শাসক শিবির।সেই অস্বস্তি কীভাবে কাটিয়ে তুলবে শাসক শিবির? সেটাই এখন দেখার।