সমুদ্রের তলায় বিশ্ব জুড়ে ইন্টারনেট কেব্ল পাতছে মেটা।।

 সমুদ্রের তলায় বিশ্ব জুড়ে ইন্টারনেট কেব্ল পাতছে মেটা।।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-সম্প্রতি কলকাতার ‘বিশ্ববঙ্গ’ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে জিও প্ল্যাটফর্মের কর্ণধার মুকেশ আম্বানি ঘোষণা করেছেন,পশ্চিমবঙ্গের দিঘায় বঙ্গোপসাগরের তীরে তারা কেবল্ ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরি করবেন। ইন্টারনেটের কেবল্ আসবে সিঙ্গাপুর থেকে সমুদ্রের তলদেশে।এই প্রকল্পের কথা শুনে অনেকেই হয়তো অবাক হয়েছেন। এবার ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গের মালিকানাধীন প্রযুক্তিসংস্থা ‘মেটা’ জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে তারা সাগরের তলদেশে ৫০ হাজার কিলোমিটার কেব্ল (তার) স্থাপন করবে। প্রকল্পের নামও ঘোষণা করেছে মেটা; ‘প্রজেক্ট ওয়াটারওয়ার্থ’।এই কেব্‌ল্ সংযোগের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও অন্যান্য অঞ্চলকে সংযুক্ত করা হবে।এর কাজ শেষ হলে তা জলের নিচে বিশ্বের দীর্ঘতম কেব্ল প্রকল্প হবে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল (মাদার) সংস্থা মেটা। মেটা বলেছে, তাদের নতুন কেব্ল প্রকল্পটি পাঁচটি প্রধান মহাদেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনা করবে এবং এই প্রকল্পের আওতায় এআই প্রকল্পগুলি উৎকর্ষের চরমে পৌঁছনোর সহায়ক হবে। মেটার এক ব্লগ পোস্টে বলা হয়েছে, তাদের প্রকল্পটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক সহযোগিতা, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং এসব অঞ্চলে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সুযোগ উন্মুক্ত করবে। মেটার তথ্য অনুযায়ী, তাদের কেব্ল সবচেয়ে দীর্ঘ হবে, যাতে ২৪ ফাইবার-পেয়ার সিস্টেম ব্যবহার করা হবে, যা একে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন করে তুলবে সাগরের নিচের কেব্ল সংযোগ ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ,এগুলি বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল পরিষেবা এবং দ্রুত বিশ্বব্যাপী তথ্য স্থানান্তরের মাধ্যম হিসেবে কাজে লাগছে। বর্তমানে বিশ্বের ৯৫ শতাংশের বেশি ইন্টারনেট ট্রাফিক সমুদ্রের তলদেশের কেলের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়।মেটার পাশাপাশি মোবাইল নেটওয়ার্ক অরেঞ্জ, ভোডাফোন ও চায়না মোবাইলের মতো সংস্থাগুলির আরও কেব্ল সংযোগ রয়েছে, যেগুলি তিন মহাদেশের ৪৫ হাজার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে।গত বছর গুগল জানিয়েছে, তারা আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সংযোগকারী সাগরের নিচে প্রথম কেব্ল নির্মাণ করবে এবং প্রশান্ত মহাসাগরে দুটি নতুন কেব্ল স্থাপনের মাধ্যমে জাপানের সঙ্গে সংযোগ বৃদ্ধির জন্য ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলার বিনিয়োগ করবে। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ভিলি লেহডনভির্তা এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেন, গত দশকে কেব্ল স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিবর্তন ঘটেছে। বৃহৎ প্রযুক্তিসংস্থাগুলি ক্রমান্বয়ে এ ক্ষেত্রে কাজ করছে। এটি অতীতের তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্ন। আগে মূলত জাতীয় টেলিকম সংস্থাগুলি জলের নিচে কেব্ল স্থাপন করত। টেলিকম ও প্রযুক্তিশিল্প বিশ্লেষক পাওলো পেসকাটোর বিবিসিকে বলেন, সাগরের তলদেশে কেব্ল ক্ষেত্রে বিনিয়োগে মেটার উচ্চাকাঙ্ক্ষার
বিষয়টি উঠে আসছে।এই উদ্যোগে স্পষ্ট যে, মেটা’ কানেকটিভিটি বা সংযোগের ব্যবসায় তাদের অংশীদারিত্ব বাড়াতে চায়। তবে এই ধরনের প্রকল্পের একটি নেতিবাচক দিকও রয়েছে। সাগরের তলদেশে কেব্ল টানার এই ধরনের উদ্যোগে ঝুঁকি ও উদ্বেগ বাড়ছে। কেব্ল বিচ্ছিন্ন করা নিয়ে কয়েকটি বিরোধের ঘটনার পর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সমুদ্রতলের যোগাযোগ পরিকাঠামো ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সংঘাতের ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.