ধলাইয়ের দুটি দুর্গম জনপদে মন্ত্রীকে পেয়ে আপ্লুত গিরিবাসীরা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্বাধীনতার দীর্ঘ
সাত দশক পর এই প্রথম বৈদ্যুতিক আলো জ্বললো ধলাই জেলার গঙ্গানগর ব্লকের দুইটি দুর্গম জনপদ বাট্টাপাড়া এবং শম্ভুরাম পাড়ায়। এই দুইটি জনপদে বসবাসকারী মানুষগুলো প্রথম বৈদ্যুতিক আলো দেখলো। স্বাধীনতার সাত দশক পর ওই দুটি প্রত্যন্ত জনপদে বৈদ্যুতিক আলো জ্বালাতে পেরে নিজের কাছেই নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতনলাল নাথ। একই সাথে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী জনগণের মুখে হাসি ফোটাতে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ‘পিএম ডিভাইন’ নামে প্রকল্প চালু করার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রকল্পের জন্যই এখন
আর ত্রিপুরা রাজ্যে এই অসাধ্য সাধন করে চলেছে বিদ্যুৎ দপ্তরের অধীনস্থ ত্রিপুরা রিনিউবেল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ট্রেডা)।মানুষগুলোর সাথে কাটিয়েছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতনলাল নাথ।প্রকল্প রূপায়ণের কাজ খতিয়ে দেখেন।আরও যে সমস্যাগুলি রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী শ্রীনাথ। বাট্টাপাড়ায় ৪৬ পরিবার এবং শম্ভুরাম পাড়ায় ৩৪ পরিবার জনজাতি অংশের জনগণ বসবাস করেন। স্বাধীনতার দীর্ঘ সাত দশক ধরে ওই দুটি জনপদে যাওয়ার কোনও রাস্তা ছিলো না। পাহাড়ের কোলে পায়ে হেঁটেই যাতায়াত করতে হতো। এখন সেখানে রাস্তা হয়েছে। দুটি জনপদকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে অন্য সড়কের সাথে। ফলে যাতায়াতে এখন অনেকটাই সুবিধা হয়েছে। বিদ্যুৎ পৌঁছানোর পর এখন ওই দুই জনপদে বসবাসকারী মানুষগুলোর জীবনযাত্রাই পাল্টে গেছে। রাতে বিদ্যুৎ-এর আলোতেই নানা কাজ করতে পারছে। তাদের সন্তানরা পড়াশোনা করতে পারছে। মোবাইল চার্জ থেকে শুরু করে টিভি, ফ্যান সবই চালাতে পাচ্ছেন। পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই খুশিতে আত্মহারা ওই দুটি জনপদের জনগণ। বিদ্যুৎমন্ত্রী শ্রীনাথ জানান, উত্তর-পূর্বে ভৌগোলিক কারণেই বহু পাহাড়ি এবং দুর্গম জনপদে বিদ্যুৎ পৌঁছুতে পারে না। তাছাড়া জীবন জীবিকার প্রশ্নে প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী জনজাতিদের সময় সময় স্থান পরিবর্তন করতে হয়। তাদের সবথেকে বড় সমস্যা হলো বিদ্যুৎ এবং পানীয় জল। ত্রিপুরা রাজ্যে এখন প্রত্যন্ত এলাকায় বসবসাকারী পরিবারের সংখ্যা হচ্ছে ৯২৫৩টি। এমন পাড়া বা গ্রাম আছে ২৭৪টি। এই পাড়া বা গ্রামগুলিতে কোথাও ৫০ পরিবার, কোথাও ২০ পরিবার, কোথাও ৩৫ পরিবার বসবাস করছে। কোথাও আবার এর থেকে কম, আবার বেশিও আছে। এই পাড়াগুলিতে গ্রিন এনার্জি অর্থাৎ সোলারের মাধ্যমে সৌর মাইক্রো গ্রিড স্থাপন করে, ছোট ছোট খুঁটির মাধ্যমে পাড়াগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ঘরে দুটি ভাল্ব বা টিউব, বাইরে একটি ভাল্ব, একটি ফ্যান, টিভি চালানোর জন্য প্রতিটি পরিবারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। ট্রিট লাইটেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ পৌঁছার কারণে এখন পাম্পের সাহায্যে পানীয় জলও পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে। এক কথায় জীবনধারা পাল্টে গেছে। মন্ত্রী জানান, গত তিন বছরে এমন ৫৪টি পাড়া ও গ্রামে সৌর মাইক্রো গ্রিড স্থাপন করে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অন্য পাড়াগুলিতেও সৌর বিদ্যুৎ পৌঁছানোর কাজ চলছে। এদিন মন্ত্রীর সাথে ছিলেন এলাকার বিধায়ক, বিডিও, বিএসি চেয়ারম্যান সহ ট্রেডার আধিকারিকরা। মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে ওই দুইটি জনপদের মানুষ দারুণভাবে খুশি এবং আপ্লুত।