সমন্বয়ের অভাবই সংকটের মূলে, জনদুর্ভোগে নজর নেই!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের রাজধানী
শহর আগরতলা যেন খোঁড়াখুড়ির শহর হয়ে উঠেছে। ফলে নিত্য দুর্ভোগ সইতে হয় সাধারণ মানুষকে। আর মাটির নীচে, নিয়ম, নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া না মেনে মাটি খোঁড়াখুঁড়ির কারণে মাঝেমধ্যেই পাইপ লাইন গ্যাস সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। তাতে বিপাকে পড়তে হয় শহরের বিপুল অংশের জনতাকে। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় ত্রিপুরা প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডকে। আখেরে এই ক্ষতিও হয় জনতারই। কেননা সরকারী তথা সাধারণ মানুষের সংস্থা গ্যাস কোম্পানি। মাটির নীচে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ও নির্দেশিকা না মেনে খননের সময় সৃষ্ট সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে গ্যাস কোম্পানির তরফে বরাবর চিঠি দেওয়া |হয় রাজ্য শিল্প দপ্তরে।তারপর এই চিঠি কোথায় থাকে তার খবর কেউ রাখে না। কিছুদিন কেটে গেলে হদিশ থাকে না চিঠির।
মোট কথায় গ্যাস কোম্পানির চিঠি পাত্তাও পায় না প্রশাসনে। অল্প কিছুদিন যেতে না যেতে সব নথি চাপা পড়ে যায় অথবা কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কে চলে যায়। সেই ফাঁকে চলে আসে নানা নতুন প্রসঙ্গ। উল্লেখিত জ্বলন্ত সমস্যাটির হারিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে দাঁড়ায়। এমন চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। আর এই কারণে সমস্যার নিবৃত্তি হওয়ার নামগন্ধ পাওয়া যায় না। একই ধরনের ঘটনা প্রায় নকলের মতো করে বারবার ঘটে চলছে। ঘটে চলছে লাগামছাড়া ভাবে। স্বাভাবিক কারণে জনদুর্ভোগ মাঝেমধ্যে চরমে পৌঁছে যায়।আর তখন সংবাদ মাধ্যমে জোের প্রচার করা হয়।প্রশাসনের একাংশের কথা অনুসারে সংবাদ মাধ্যম বাজার গরম করতে ঘরটবর করে!রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত এই অংশটি সংবাদ মাধ্যমের খবরকে তেমন পাত্তা দিতে রাজি নয়।আর প্রশাসনের মধ্যে এই অংশটির দাপট চলছে বলে জানা যায়। জনদুর্ভোগ জাতীয় বিষয় নিয়ে তাদের কিছু যায় আসে না।
এমতাবস্থায় আগরতলা শহরের মানুষের দুর্ভোগ কোনওদিন কমবে কি না সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ রাজ্যের রাজনৈতিক প্রশাসকের বড় অংশ ব্যস্ত রাজা নীতির হিসাবনিকাশ নিয়ে। তাদের মাথাব্যথার মূল বিষয় নানা রাজনৈতিক হিসাব, নির্বাচনে জয় পরাজয়, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি ইত্যাদি। তাদের পক্ষে দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজ, জনস্বার্থ অথবা দুর্ভোগজনিত ঘটনার প্রতি প্রত্যক্ষভাবে নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না। তাদের হয়ে এই কাজ করার কথা প্রশাসনিক আধিকারিক তথা স্থায়ী প্রশাসক আমলাদের। মুশকিল হলো রাজ্যে স্থায়ী প্রশাসক আমলাদের বড় অংশ নিজেদের দায়িত্বের প্রতি মনোযোগী নয় বলে খবর। তাদের ব্যস্ততা কারণ ব্যক্তিগত সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে। জনগণের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে তাদের মোটেও মাথাব্যথা নেই বলে অভিযোগ।
এর কুফল হিসাবে বছরের পর বছর ধরে একই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে চলছে। প্রশাসনিক কাজকর্মের মধ্যে কোনও ধরনের সমন্বয়ের দেখা মিলছে না। সরকারের এক দপ্তর তার সঙ্গে সম্পর্কিত অন্য দপ্তরের কাজকর্ম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে চাইছে না। একই অবস্থা চলছে সরকারের আওতাধীন বিভিন্ন নিগম সহ আগরতলা শহরের স্থানীয় প্রশাসন পুর নিগমের। যেন একধরনের অরাজক পরিস্থিতি কায়েম হয়ে রয়েছে। এমনটাই মনে করেন ওয়াকিবহাল মহলের বড় অংশ। মহলটির বক্তব্য, প্রশাসনিক সমন্বয় তৈরি হলে বহু সংকট নিজে থেকেই কেটেযাবে। কাজে আসবে গতি। জনগণের গাঁটের অর্থের অপচয় কমবে। শুধু মাটির নীচে খোঁড়াখুড়ি জনিত সমস্যা নয়, বিপদ কমবে আরও বহুদিক থেকে।কমবে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। এখন এই সমন্বয় কবে তৈরি হয় – অথবা আদৌ তৈরি হয় কি না।