প্রি-ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতাই কমাবে ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা!!

 প্রি-ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতাই কমাবে ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রিডায়াবেটিস এই বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই।এক গবেষণায় জানা গেছে, ৮০ শতাংশই জানেন না যে তাদের প্রি-ডায়াবেটিস আছে। কোনও উপসর্গ না হওয়ায়, অধিকাংশের ক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষা ছাড়া এটি চিহ্নিত করা যায় না। তবে আগেই নির্ণয় করা গেলে ডায়াবেটিস থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। ডায়াবেটিসকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। কারণ এ রোগটি হওয়ার পর নানা শারীরিক সমস্যা বাড়তে থাকে, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস এড়াতে প্রি-ডায়াবেটিস সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে।আসুন এই প্রতিবেদন থেকে প্রি-ডায়াবেটিস সম্পর্কে বিশদে জেনে নেওয়া যাক।
*প্রি-ডায়াবেটিস কী?:-
সুস্থ-স্বাভাবিক একজনের রক্তে একটা নির্দিষ্ট মাত্রার গ্লুকোজ বা শর্করা থাকে। চিকিৎসকদের মতে, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা একটা নির্দিষ্ট ধাপ অতিক্রম করলে তাকে বলে ডায়াবেটিস। যখন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ের থেকে বেশি হয়, কিন্তু ডায়াবেটিসের নির্ধারিত মাত্রায় পৌঁছায় না, সে পর্যায়কে বলে প্রি-ডায়াবেটিস।
*লক্ষণ:-সাধারণত প্রি-ডায়াবেটিসের নির্দিষ্ট কোনও লক্ষণ থাকে না। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন- শরীরের কিছু জায়গায় (ঘাড়, বগল, কুচকি) ত্বক কালো হয়ে যেতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে ঘন ঘন তৃষ্ণা পাওয়া, বার বার প্রস্রাব হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, দুর্বলতা, ওজনে পরিবর্তন (হ্রাস বা বৃদ্ধি), খিদে বেড়ে যাওয়া, হাত-পা জ্বালা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যেতে পারে।এইরকম কোনও লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
*ঝুঁকি:-যাদের শরীরের ওজন বেশি হয়, যাদের বয়স ৪৫-এর বেশি, বংশে বিশেষ করে যাদের বাবা-মা, ভাই-বোনদের মধ্যে কারও ডায়াবেটিস আছে, যারা শারীরিক পরিশ্রম কম করেন, যাদের কোমরের পরিধি বেশি এবং যাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হওয়ার ইতিহাস আছে, তাদের প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
*কী খাবেন:-প্রি-ডায়াবেটিস হলে কী ধরনের খাবার খেতে হবে তা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির ওজন এবং অন্যান্য শারীরিক অবস্থার ওপর। এই ধরনের রোগীদের ঘন চিনিযুক্ত খাবার, কোমল পানীয়, উচ্চ ক্যালরিযুক্ত ফাস্টফুড, অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার এবং উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার যেমন- চিনি, মিষ্টি ফল, সাদা চালের ভাত ও আটার তৈরি রুটি পরিহার করতে হবে।
*প্রতিরোধ:-নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। শারীরিক ওজন বেশি হলে তা কমিয়ে ফেলতে হবে

ঘন চিনিযুক্ত খাবার যেমন-– মিষ্টি চকলেট, কোমল পানীয়, ফাস্টফুড, অ্যালকোহল, ধূমপান বাদ দিতে হবে।
মাঝে মাঝে খালি পেটে ও খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে রক্তে সুগার মাপতে হবে।
এ ছাড়া রক্তে HbA1C পরীক্ষা করে ডাক্তারকে দেখানো উচিত।
প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। কারণ ঘুমের অভাব আপনার শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। তার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকে। এর ফলে প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই নিশ্চিত করুন যে আপনি প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমাচ্ছেন।
*প্রি-ডায়াবেটিস নির্ণয় ও চিকিৎসা:- চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রি-ডায়াবেটিস নির্ণয় করার পরীক্ষা করানো উচিত। কয়েকটি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রি-ডায়াবেটিস নির্ণয় করা যায়। যেমন- HbA1c পরীক্ষা, গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট, খালি পেটে রক্তের গ্লুকোজ।এই পরীক্ষাগুলি। সঠিক সময় প্রি-ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে পারলে এবং প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিলে এই জটিল রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.