দিনভর দুর্ভোগ,আজও বন্ধ থাকবে উড়াল সেতু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্মার্ট সিটি আগরতলায় আনস্মার্ট কাজকর্ম বহাল। আগরতলা শহর তথা রাজ্যের একমাত্র উড়াল সেতু ঘিরে চলছে এই কাণ্ড কারখানা। যেন প্রশাসনিক উদ্যোগে৭ জনদুর্ভোগ নিশ্চিত করার আয়োজন চলছে। অন্তত ভুক্তভোগী আগরতলা শহরবাসী সহ রাজ্যের সাধারণ মানুষের এমনই অভিযোগ। রবিবার সকাল থেকে উড়াল সেতুটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিকাল পর্যন্ত উন্মুক্ত করা হয়নি সেতুটি। সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেও এটি বন্ধ রাখা হবে বলে খবর। ফলে নিশ্চিতভাবে নাজেহাল হতে হবে যানবাহন চালক সহ সাধারণ মানুষকে। রাজ্য পূর্ত দপ্তরের তরফে সেতুটির সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে রবিবার সকাল থেকে। এই কাজউ প্রাথমিকভাবে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এর ভিত্তিতে পূর্ত দপ্তরের তরফে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরের ট্রাফিক বিভাগের সম্মতি চাওয়া হয় বলে খবর।নিয়মমাফিক সম্মতি চাওয়ার পর ট্রাফিক পুলিশের তরফে দুদিনের জন্য, মানে রবি ও সোমবার উড়াল সেতুর সংস্কার কাজের পক্ষে মত দেয়। ট্রাফিক পুলিশের তরফে কাগজেপত্রে দুদিন কাজ করার বিষয়টি মৌখিকভাবে একদিনে কাজ শেষ করার জন্য অনুরোধ জানায় রাজ্য পূর্ত দপ্তরকে।একই সময়ে আগরতলা পুর নিগমের তরফেও উড়াল সেতুর কিছু সংস্কার কাজে হাত দেওয়া হয়। মূলত বৈদ্যুতিক বাতির সব কয়টি ঠিকঠাকভাবে জ্বালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পুর নিগমের তরফে। জানা গেছে রবিবার একদিনের মধ্যে এই কাজের প্রায় নব্বই শতাংশ শেষ হয়ে গেছে। বাকি কাজ সোমবার সকালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
পূর্ত দপ্তরের তরফে উড়াল সেতুতে নতুন করে বিটুমিন এবং আনুষঙ্গিক নানা সামগ্রীর আস্তরণ দেওয়ার কাজ চলছে। সেতুতে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। রবিবার প্রথম দিন সকালে হাসপাতাল চৌমুহনীর দিক থেকে বটতলার দিকে সেতুর সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। রাতে মেলারমাঠ সহ বটতলার অংশে হাত দেওয়া হয়েছে বলে খবর। প্রাপ্ত খবর অনুসারে এই অংশের কাজ পূর্ত দপ্তর সোমবার করবে বলে প্রাথমিকভাবে৬ পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ট্রাফিক পুলিশের আপত্তি সহ বিভিন্ন মহলের চাপের কারণে এই অংশের কাজ রবিবার রাতে করার উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানা যায়। সোমবার সকালে ড্রপগেট এলাকায় কাজ করা হবে বলে পূর্ত দপ্তর সূত্রের বক্তব্য। সূত্রটি জানায় আকাশ পরিষ্কার থাকলে কাজ চলবে। তা না হলে তা বন্ধ থাকবে। সেই ক্ষেত্রে সেতুটি খুলে দেওয়া হতে পারে বলে জানায় সূত্রটি। দপ্তরের তরফে এইভাবে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে রাতের বদলে দিনের বেলায় কেন এই জাতীয় কাজ করা হয় জানতে চাইলে বলা হয় রাতে কাজের গুণগত মান ভালো হয় না। ফলে দিনের বেলাতেই কাজ করতে হয়।
এমন হলে শেষ পর্যন্ত রবিবার রাতে কেন কাজে হাত দেওয়া হয়েছে এর সদুত্তর পাওয়া যায়নি। বস্তুত আগরতলা শহরের যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে উড়াল সেতু একটি আবশ্যক অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উড়াল সেতু ছাড়া বিশেষত শহরের দক্ষিণ,পশ্চিম ও মধ্যাংশের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের কথা কল্পনাও করা যায় না।ফলে এর সংস্কার করা সহ নানা প্রয়োজনে এটি বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। সেই ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ নাগালে রাখা যেতে পারে। যানবাহন চলাচলের উপর চাপ কমানো সম্ভব হতে পারে। এমনই মনে করে ওয়াকিবহাল মহলের বড় অংশ।
এমতাবস্থায় শনিবার ইংরেজি এপ্রিল মাসের চতুর্থ শনিবার গেছে। এইদিন বিদ্যালয় ছাড়া সব সরকারী প্রতিষ্ঠানে ছুটি গেছে। রবিবার প্রায় সব সরকারী ও বেসরকারী
প্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি। অন্তত আগরতলা শহরের প্রায় সব কিছুই বন্ধ থাকে এদিন। অথচ শনিবার সরকারী ছুটির দিনে উড়াল সেতুর সংস্কার করার কথা মনে আসেনি রাজ্য পূর্ত দপ্তরের। দপ্তর রবিবার থেকে শুরু করে পরবর্তী তিনদিন, মানে মঙ্গলবার পর্যন্ত এই কাজের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। শেষমেশ ট্রাফিক পুলিশের আপত্তিতে তিনদিনের পরিবর্তে দুদিনে কাজ শেষ করার কথা চিন্তাভাবনা করা হয়।
এমনিতেই সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন সোমবার আগরতলা শহরে ভিড় বাড়ে। – চাপ বৃদ্ধি হয় যানবাহনের। এর উপর শনি ও রবিবার সপ্তাহের শেষে পরপর
দুদিন বন্ধ থাকার পর সোমবার শহরে নিশ্চিতভাবে ভিড় বাড়বে। বাড়বে যানবাহনের চাপ। আর এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা বলে জানা সাধারণ মানুষের। অথচ রাজ্য পূর্ত দপ্তর কর্তৃপক্ষের এটা জানা না থাকার কথা নয়। বাস্তবে দপ্তরের মাথামোটা হিসাবে পরিচিত একাংশ প্রকৌশলী সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের প্রসঙ্গে গুরুত্ব দিতে নারাজ বলে অভিযোগ। এই কারণে দিনের পর দিন দুর্ভোগ সইতে হয় রাজ্য ও শহরবাসীকে। সারা দেশ ও বিশ্ব জুড়ে রাতের বেলায় এই জাতীয় কাজ করা হয়। ত্রিপুরায় যেন মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কাজ চলে দিনে, মানুষের চূড়ান্ত ব্যস্ততার সময়। অন্য বহু শহরের মতো আগরতলা শহরে মানুষের কর্মস্থলে বের হওয়ার এবং কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার সময় সকাল মোটামুটি নয়টা থেকে এগারোটা এবং বিকাল সাড়ে চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত মাত্রা ছাড়া ভিড় দেখা যায়। আর তখনও উড়াল সেতু সংস্কার সহ এই জাতীয় কাজ বন্ধ রাখার রেওয়াজ প্রায় নেই রাজ্যে।