রাহ-বীর প্রকল্প!

অনলাইন প্রতিনিধি :-যান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার ক্ষেত্রে পথচারী সহ নাগরিকরা অনেক ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্থ হতে দেখা যায়। কোনো রকম আইনি ঝামেলায় না ফেসে যায় এই আতঙ্কে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সুযোগ থাকা সত্বেও দুর্ঘটনায় আহত ব্যাক্তি সঠিক সময়ে হাসপাতালে না পৌঁছাতে পারায় এবং সময়মতো সঠিক চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয়ে থাকে। তাই দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করতে এবং জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে কেন্দ্রীয় সরকারের অভিনব উদ্যোগ। ২১ এপ্রিল ২০২৫ থেকে শুরু করা হয়েছে রাহ-বীর প্রকল্প যা আগে গুড সামারিটান নামে পরিচিত ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার ২০২১ সালে এই প্রকল্পটি চালু করেছিল। এই প্রকল্পে যে সকল ব্যক্তি ও নাগরিক দুর্ঘটনাগ্রস্তদের গোল্ডেন আওয়ার অর্থাৎ দুর্ঘটনার এক ঘন্টার মধ্যে আহতকে চিকিৎসা পরিষেবার আওতায় নিয়ে আসবেন
সেইসব সহায়তাকারীকে সরকারের পক্ষ থেকে ২৫০০০ টাকা দিয়েপুরস্কৃত করা হবে। অপরদিকে সাহায্যকারী ব্যক্তিকে কোনও ধরনের আইনি ঝামেলায়ও জড়াতে হবে না। এক্ষেত্রে গুরতর আহত বলতে দুর্ঘটনায় আহত ব্যাক্তির বড় ধরণের অপারেশন, রোগীকে ৩ দিনের বেশি হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হলে কিংবা মাথা বা মেরুদন্ডে আঘাত বা চিকিৎসা চলাকালীন সময়েই যদি মৃত্যু ঘটে তবে এক্ষেত্রেই তা গুরুতর আহত বলে ধরা হবে। তাছাড়াও
যদি একজন রাহ-বীর একের অধিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তবে তাকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে। যদি একের অধিক রাহ-বীর কেবলমাত্র একজন দুর্ঘটনা গ্রস্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার মাধ্যমে তার জীবন বাঁচানোর জন্য সাহায্য করেন তবে এই ২৫ হাজার টাকা সকল রাহ-বীরের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে। এছাড়াও যদি একাধিক রাহ-বীর বা সুনাগরিক একের অধিক দুর্ঘটনা গ্রস্ত ব্যক্তিকে সাহায্য করেন তবে সে ক্ষেত্রে সকলকে ২৫ হাজার টাকা করে পুরস্কৃত করা হবে। পুরস্কার প্রাপ্ত প্রত্যেক রাহ-বীর আর্থিক পুরস্কারের পাশাপাশি একটি করে শংসাপত্রও পাবে।তাছাড়াও প্রতিবছর ১০ জন রাহ-বীরকে ১ লক্ষ টাকা করে জাতীয়স্তরে পুরস্কৃত করা হবে। এইক্ষেত্রে একজন রাহ-বীর বছরে ৫ বার পর্যন্ত পুরস্কার পেতে পারেন।
রাহ বীর হিসেবে বিবেচিত হতে গেলে সহায়তাকারী ব্যক্তিকে পুলিশকে প্রথমে দুর্ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে তাহলে পুলিশ এবং চিকিৎসকের মাধ্যমে তথ্য যাচাই করা হবে এবং তা সরকারি নথিতে ঘটনার সমস্ত বিবরণ উল্লেখ করে একটি প্রাপ্তি স্বীকার প্রদান করা হবে। এই স্বীকৃতি জেলা মূল্যায়ন কমিটির কাছে পাঠানো হবে এবং একটি কপি রাহ-বীরকে প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রে যদি রাহ-বীর সরাসরি আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তাহলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করবে এবং পুলিশ একইভাবে স্বীকৃতি প্রদান করবে। জেলাশাসক, জেলা পুলিশ প্রধান, মুখ্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং পরিবহন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে জেলাস্তরে একটি মূল্যায়ন কমিটি গঠিত হবে এছাড়াও রাজ্যস্তরে একটি পর্যবেক্ষন কমিটি গঠিত হবে। সভাপতি হিসেবে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব, স্বাস্থ্য দপ্তরের কমিশনার, পুলিশ প্রধান এবং পরিবহন কমিশনারগণ এই রাজ্য স্তরের কমিটির সদস্য হবেন।
জেলা মূল্যায়ন কমিটিগুলো প্রতি মাসে নথিভূক্ত বিষয়গুলি পর্যালোচনা ও অনুমোদন করে পরিবহন কমিশনারের কাছে প্রেরণ করবে। রাজ্য পরিবহন দপ্তর PFMS-এর মাধ্যমে অনলাইন অর্থ প্রদান করবে এবং MoRTH প্রতি মাসে সেই অর্থ ফেরৎ দেবে।