কদর বাড়ছে ত্রিপুরার উৎপাদিত চা পাতার : মুখ্যমন্ত্রী

 কদর বাড়ছে ত্রিপুরার উৎপাদিত চা পাতার : মুখ্যমন্ত্রী
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন।। ১৯৮০ সালে রাজ্যে চা উন্নয়ন নিগম তৈরি হয়েছিল। কিন্তু চা শিল্পের উন্নয়নে তাদের সেই ভূমিকা দেখা যায়নি। ২০১৮ সালের আগে যে চা শিল্প রুগ্নতায় পরিণত হয়েছিল, বর্তমানে সরকার এবং চা উন্নয়ন নিগম মিলে সেই রুগ্নতা অনেকটাই দূর করতে পেরেছে।এই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা। গত ১০ জুলাই রবিবার দূর্গাবাড়ি চা বাগানে গ্যাস ভিত্তিক চা প্রক্রিশাকরণের দুটি ইউনিটের উদ্ভোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতবর্ষের মধ্যে ত্রিপুরা চা উৎপাদনে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।

গোটা ভারতের মধ্যে যে চা উৎপাদন হয় তার ১০ শতাংশ হয় ত্রিপুরায়। বর্তমান চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহার নেতৃত্বে রাজ্যের চা শিল্প উন্নয়নের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেশের অকশন মার্কেটেও রাজ্যের চা ভালো স্থান করে নিতে পেরেছে। তাই ত্রিপুরা রাজ্যে চা অকশন সেন্টার খোলার পরিকল্পনা রাজ্য সরকার নিচ্ছে। সাথে সাথে ত্রিপুরার চা কে বাংলাদেশে রপ্তানি করার জন্য রাজ্য সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিগত সরকারের সমালোচনা করে বলেন, সেই সময়ে সরকার শুধু চার শ্রমিকদের জন্য মায়া কান্না করেছে। আর তাদের ভোট ব্যাঙ্ক হিসাবে ব্যবহার করেছে। ২০১৮ তে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর চাষ শ্রমিকদের বিভিন্ন উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে শুরু করে। এমনকি তাদের মজুরি বৃদ্ধি করে ১০৫ টাকা থেকে ১৭৬ টাকা করা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, চা শ্রমিকদের নিজস্ব জায়গার জমি, প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসার ব্যবস্থা সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানে রাজ্য সরকার কাজ করছে। একটাই লক্ষ্য চা শ্রমিকদের আর্থিক উন্নয়ন কিভাবে করা যায়। এই উন্নয়নের জন্য চা বোর্ডের ভর্তুকি কিভাবে আরো প্রসারিত করা যায় সে বিষয়েও কাজ করছে নিগম ও রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী এদিন উপস্থিত চা শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে আহ্বান রাখেন,তারা যাতে সরকারের প্রতি আস্থা রাখে। সরকার সব রকম সুযোগ-সুবিধা তাদের জন্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মুখ্যমন্ত্রী তথ্য দিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে রেগা শ্রমের মাধ্যমে বারোশো একর জমিতে চা চাষ করা হয়েছে। বিশেষ করে ব্লক এলাকাতে। এর ফলে ৯০০ জন সুবিধাভোগী উপকৃত হয়েছেন। চা শিল্পের আধুনিকিকরণে গত ১০ জুলাই রবিবার, দুটি গ্যাস ভিত্তিক চা প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই দুটি গ্যাস ভিত্তিক চা প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্প হল ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম লিমিটেড ও দুর্গাবাড়ি চি শ্রমিক সমবায় সমিতির। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চা বাগান গুলিতে পর্যটকদের টানতে ট্যুরিজমকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কমলাসাগর চা বাগানের বলাকা টুরিস্ট কটেজ, ব্রহ্মকুণ্ড টুরিস্ট লজ,দূর্গাবাড়ী চা বাগানের শ্যামলী টুরিস্ট গেস্ট হাউস গুলোকে অত্যাধুনিককরণের প্রক্রিয়াকরণ চলছে। তার সাথে মাছ মারাও চা প্রক্রিয়াকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সেন্ট্রাল ট্রি প্রসেসিং সেন্টারে একটি মিউজিয়াম তৈরির চিন্তাভাবনা রাজ্য সরকারের রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে চা শিল্পের উন্নয়নে এবং শ্রমিকদের স্বার্থে রাজ্য সরকার কতটা তৎপর তা বুঝাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কিছুদিন আগে দুটি চা বাগানে কিছু সমস্যা নিয়ে শ্রমিকরা পথ অবরোধ করেছিল। রাজ্য সরকার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সেই সমস্যার সমাধান করে এবং শ্রমিকদের বেতন ১৭৬ টাকা করে দেওয়ার ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহা রাজ্যের চায়ের উন্নয়নের সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বিগত সরকারের আমলে চা উন্নয়নের চিত্র এবং বর্তমান সরকারের মাত্র সাড়ে চার বছরের চা উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি দেখিয়ে দেন, আজ রাজ্যের চা শ্রমিক এবং চা পাতা দেশের কোন জায়গায় পৌঁছে গেছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন বিধায়ক কৃষ্ণদাস, বামুটিয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান শিলা দাস সহ অন্যান্যরা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.