যাত্রী হয়রানি বন্ধে শীঘ্রই প্রিপেইড কাউন্টার চালু
আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরে যাতে বিমান যাত্রীরা কোনও ধরনের হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার না হন তা নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার বিকালে মহাকরণে এক উচ্চপর্যায়ে বৈঠক হয় । পরিবহণমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়ের পৌরোহিত্যে বৈঠকে যাত্রী পরিবহণে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । বিমানবন্দরে একাংশ মারুতি ও অটো চালকের বিমানযাত্রীর প্রতি অভব্য আচরণ ও তাণ্ডব বন্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয় বৈঠকে । মহাকরণে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পরিবহণমন্ত্রী ছাড়াও অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবহণ দপ্তরের প্রধান সচিব এলএইচ ডার্লং, রাজ্য পুলিশের আইজি ( আইনশৃঙ্খলা ) অরিন্দম নাথ , পশ্চিম জেলার এসপি জে রেড্ডি , ট্রাফিক এসপি এল ডার্লং , বিমানবন্দর অধিকর্তা রাজীব কাপুর প্রমুখ । বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বিমানে আগত যাত্রীদের বিমান থেকে নেমে বাড়ি বা গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে বিমানবন্দরে যাত্রী পরিবহণ ব্যবস্থায় তথা গাড়ির জন্য কোনও হয়রানি বা দুর্ভোগের শিকার না হতে হয় সেই জন্য প্রিপেইড কাউন্টার চালু করা হবে । টার্মিনাল ভবন থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার গেটে ( টার্মিনাল ভবনের ভেতর ) থাকবে একাধিক প্রি – পেইড গাড়ির কাউন্টার । অটোর জন্য পৃথক প্রিপেইড কাউন্টার যেমন থাকবে , তেমনি মারুতি বা ফোর হুইলার গাড়ির জন্য পৃথক প্রিপেইড কাউন্টার থাকবে । অনলাইনে বুক করা ওলা , ওবের , জুগনো ইত্যাদি ক্যাব বুকিং গাড়ির জন্যও থাকবে পৃথক প্রি – পেইড কাউন্টার । অর্থাৎ বিমান যাত্রীরা যাতে তাদের চাহিদা ও পছন্দমত প্রি – পেইড গাড়ি নিয়ে বিমানবন্দর থেকে বাড়ি বা গন্তব্যস্থলে নির্বিঘ্নে যেতে পারেন মহাকরণে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সেই বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । বৈঠকে বিমানবন্দর অধিকর্তা প্রতিশ্রুতি দেন টার্মিনাল ভবনে প্রি – পেইড কাউন্টার চালু করতে বিনা পয়সায় ঘর দেবেন । বৈঠকে এই সিদ্ধান্তও নেওয়া হয় রাজ্য পুলিশ , ট্রাফিক বিভাগ ও পরিবহণ দপ্তর প্রি – পেইড কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে । কলকাতা সহ দেশের বড় বড় বিমানবন্দরে যে ভাবে প্রিপেইড কাউন্টার চালু করে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে ঠিক সেই ভাবে আগরতলা এমবিবি বিমানবন্দরেও প্রিপেইড কাউন্টার থাকবে । দিনের প্রথম বিমান থেকে শুরু করে রাতে শেষ বিমান পর্যন্ত প্রিপেইড কাউন্টার চালু থাকবে । সরকারীভাবে পরিবহণ দপ্তরের যাত্রী ভাড়ার রেট চার্ট অনুযায়ী প্রিপেইড ভাড়ার সুবিধা থাকবে । বিমানবন্দরে বর্তমানে যত অটো , মারুতি , ফোর হুইলার গাড়ি রয়েছে সেই সব গাড়ি প্রিপেইড কাউন্টারের সঙ্গে নথিভুক্ত করে দেবে পরিবহণ দপ্তর ও ট্রাফিক বিভাগ । প্রিপেইড কাউন্টারের সঙ্গে নথিভুক্ত বা যুক্ত নেই এমন কোনও অটো , মারুতি ( ফোর হুইলার ) গাড়ি বিমানবন্দরের ভেতর যাত্রী পরিবহণে থাকতে পারবে না । শুধুমাত্র প্রিপেইড কাউন্টারের সঙ্গে নথিভুক্ত এই সব গাড়ি প্রিপেইড পরিষেবায় সঠিক পদ্ধতি ও গাইডলাইন মত বিমানবন্দর থেকে বিমান যাত্রী নিয়ে যেতে পারবে । এতো দিন ধরে বিমানবন্দরে অটো ও মারুতি গাড়িগুলির চালকরা সিণ্ডিকেট তৈরি করে যেভাবে যাত্রী পরিষেবা দিত তা হবে না । মহাকরণের বৈঠকের পর সন্ধ্যায় পরিবহণ দপ্তরের প্রধান সচিব এলএইচডার্লং জানান , খুব দ্রুত যাতে প্রিপেইড কাউন্টার চালু করা যায় সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । বিমানবন্দরে যাতে যাত্রীরা সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ও শান্তিপূর্ণ ভাবে যাত্রী পরিবহণ ব্যবস্থা সহ সব ধরনের সুবিধা পান পরিবহণ দপ্তর , রাজ্য পুলিশ , ট্রাফিক বিভাগ তা নিশ্চিত করবে বলে পরিবহণ দপ্তরের প্রধান সচিব জানান । প্রসঙ্গত , দীর্ঘ দিন ধরে বিমানবন্দরে যাত্রী পরিবহণে একাংশ অটো ও মারুতি গাড়ি চালক অরাজকতা কায়েম করে রেখে যাত্রীর সঙ্গে প্রায়ই অভব্য আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে । গত রবিবার গাড়ি ভাড়াকে কেন্দ্র করে একাংশ অটো ও মারুতি গাড়িচালক যাত্রীর উপর আক্রমণ করার ঘটনা ঘিরে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এই বিষয়ে পুলিশে মামলাও হয়েছে মারুতির এক চালক গ্রেপ্তারও হয়েছে । এই ঘটনায় পরই পরিবহণ দপ্তর ও পুলিশ এখন নড়েচড়ে বসেছে । এদিকে এদিনের বৈঠকে বিমানবন্দরে প্রবেশে যথেচ্ছ ভাবে গাড়ি থেকে এন্ট্রি ফি আদায় করা নিয়েও আলোচনা হয় । এই ভাবে গাড়ি থেকে এন্ট্রি ফি আদায় করা নিয়ে পরিবহণ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় আপত্তি জানান । বিমানবন্দর অধিকর্তাকে গাড়ি থেকে এন্ট্রি ফি আদায়ে কী গাইডলাইন রয়েছে তা দেখানোর জন্য নির্দেশ দেন মন্ত্রী ।