৩০০ বছরে এই প্রথম মিলল বিশ্বের সবচেয়ে বড় গোলাপি হিরে

 ৩০০ বছরে এই প্রথম মিলল বিশ্বের সবচেয়ে বড় গোলাপি হিরে
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

পৃথিবীর বুকে আরও এক আশ্চর্যজনক খনিজ দ্রব্যের আবিষ্কার । বিরল গোলাপী হিরের হদিশ মিলল মধ্য আফ্রিকার দেশ অ্যাঙ্গোলার একটি খনিতে । গোলাপী হিরে এমনিতেই খুব একটা পাওয়া যায় না । এর আগে যে কয়েকবার তা পাওয়া গিয়েছে অ্যাঙ্গোলা থেকে পাওয়া গোলাপী হিরেটি সবথেকে বড় বলে মনে করা হচ্ছে । খননকারী সংস্থার দাবি , এটি গত ৩০০ বছরের মধ্যে পাওয়া যাওয়া সবচেয়ে বড় গোলাপি হিরেঅ্যাঙ্গোলার হিরে সমৃদ্ধ উত্তর পূর্বাঞ্চলের লুলো খনিতে এটি পাওয়া যায় । ১৭০ ক্যারেটের গোলাপি হিরেটির নাম রাখা হয়েছে ‘ দ্য লুলো রোজ ‘ । ইতিমধ্যেই বিশ্ব জুড়ে আলোড়ন তৈরি করেছে এই হিরেটি

টাইপ ২ এ হিরেটিকে খুঁজে পাওয়াকে ঐতিহাসিক ঘটনা হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে । এটি অন্যতম বিরল এবং প্রাকৃতিক পাথরগুলোর মধ্যে অন্যতম বিশুদ্ধ । এটি পাওয়ার ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছে অ্যাঙ্গোলার সরকার। খনিটির মালিকানায় তাদের অংশও রয়েছে । অ্যাঙ্গোলার খনিজ সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী ডায়ামিনতিনো আজেভেদো বলেন , ‘ লুলো থেকে উদ্ধার হওয়া এই রেকর্ড এবং দর্শনীয় গোলাপী হিরেটি বিশ্ব মঞ্চে অ্যাঙ্গোলাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে দিল । আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে হিরেটি বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছে অ্যাঙ্গোলার সরকার ।জানা গিয়েছে , খনিজ দ্রব্যের সন্ধানে উত্তর পূর্ব অ্যাঙ্গোলায় খনন কার্য চালানো হচ্ছিল।

যার দায়িত্বে ছিল অস্ট্রেলিয়ার এক সংস্থা । বেশ কিছু দিন ধরেই চলছিল খনন কাৰ্য । তখনই উদ্ধার হয় এই গোলাপী হিরেটি । প্রথমে বোঝা না গেলেও পরে উচ্চ পদস্থ আধারিকাররা বুঝতে পারেন এটি দুর্লভ গোলাপী হিরে । অতীতে এই ধরনের হিরে কাটাএবং পালিশ করার পর রেকর্ড দামে বিক্রি হয়েছে । তবে এই হিরে কেটে ও পালিশ করার পর এর ওজন অনেকটাই হ্রাস পাবে । তবে তারপরও যে দাম হবে তা ইতিহাস তৈরি করতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে । হিরেটি এখন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রাখা হয়েছে । তার পালিশের কাজ কবে শুরু হবে তা এখনও জানা যায়নি ।হিরে সাধারণত পাওয়া যায় সাদা , বাদামী এবং হলুদ রঙের।

রঙিনের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক রঙ যত বেশি গাঢ় বা সাদা হিরের ক্ষেত্রে রঙের অভাব তত বেশি হয় । সেই হিরে তত বেশি দুর্লভ এবং ব্যয়বহুল পাথর হিসেবে গণ্য করা হয় । প্রাকৃতিক উপায়ে গঠিত ফ্যান্সি গোলাপী হিরে হল বাজারের সবচেয়ে দামী হিরে , যার দাম প্রতি ক্যারেটে প্রায় ৩০ লাখ ডলার । যা একটি সাদা হিরের দামের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি । খনন করে তোলা সমস্ত গোলাপী হিরের বেশিরভাগই অস্ট্রেলিয়ার আর্গেইল খনি থেকে আসে । আর্গেইল গোলাপী হিরে খুব সীমিত সরবরাহের কারণেই এত ব্যয়বহুল ।একটি গোলাপী হিরে আগ্নেয়গিরির কিম্বারলাইট পাইপে লক্ষ লক্ষ বছর সময় নিয়ে সাদা হীরের মতো শুধুমাত্র কার্বন দিয়ে তৈরি হয়

একই কার্বন যা পেনসিল তৈরিতে ব্যবহৃত হয় । কার্বন আটকে থাকা খণ্ডগুলি প্রচণ্ড তাপ এবং চাপের ফলে হিরের মতো স্বচ্ছ অবস্থায় রূপান্তরিত হয় । একটি গোলাপী হিরে আরও তীব্র তাপ , চাপ এবং অধিকতর সময় পেয়ে কাঠের মতো শক্ত স্ফটিক দানায় রূপান্তরিত হয় । এগুলো এত শক্ত হয়ে সংকুচিত হয় যে , কেবলমাত্র গোলাপী আলো এই হিরের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করতে পারে এবং পাথরটির ভেতরে ওই রঙটাই চকমক করতে থাকে ।

প্রসঙ্গত , এর আগেও এর থেকে ছোট হলেও একাধিক গোলাপী হিরে অনেক দামে বিক্রি হয়েছে । এর মধ্যে একটি হচ্ছে ‘ পিংক স্টার ‘ । এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যয়বহুল গোলাপি হিরে । ৫৯ ক্যারেটের হিরেটি ২০১৭ সালে ৭ কোটি ১২ লাখ ডলার দামে বিক্রি হয়েছিল । ২০১৩ সালে আরেকটি নিলামে ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল । দামের দিক থেকে পিংক স্টারের পরে দ্বিতীয় স্থানে আছে ‘ ওপেনহাইমার ব্লু ‘ নামে আরেকটি হিরে । যা গত মে মাসে ৫ কোটি ডলারে বিক্রি হয় । এখন এই গোলাপী হিরাটি কত দামে বিক্রি হয় সেটাই দেখার ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.