পরিকাঠামো সমস্যায় ধুঁকছে অমরপুর ডিএটি বিদ্যালয়!!
দৈনিক সংবাদ অনলাইন, অমরপুর।। অমরপুরের বনেদি স্কুল হিসাবে পরিচিত দক্ষিন অমরপুর টাউন উচ্চত্বর মাধ্যমিক (ডিএটি) বিদ্যালয়টি মারাত্মক পরিকাঠামো সমস্যায় ধুঁকছে। সমগ্র মহকুমার মধ্যে পড়াশোনায় ডিএটি স্কুলের বেশ খ্যাতি থাকলেও বাম এবং রাম উভয় আমলেই উপেক্ষিত এই বিদ্যালয়টি।বাম আমলে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার জজু দেখিয়ে ওই স্কুলটির পরিকাঠামোর যেমন কোন উন্নতি করা হয়নি, তেমনি রাম আমলেও গত সারে চার বছরে স্কূলটির বিশেষ উন্নতি হয়নি। সমস্যা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।
শহরের বনেদি স্কুলটি পরিকাঠামোগত সমস্যায়, পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে এবং ছাত্রছাত্রীদের বসার পর্যাপ্ত বেঞ্চির অভাবে ধুঁকছে। বাম আমলে দলের কর্ডিনেশন কমিটির শিক্ষক নেতাদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পরিনত হয়েছিল ওই বনেদি স্কুলটি। ফলে পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে প্রথম দশে স্থান করে নেওয়া এবং একশো শতাংশ উত্তীর্ণ হওয়া ডিএটি স্কুলের পড়াশোনার মান অনেকটাই তলানিতে গিয়ে পৌছায়। রাম সরকারের প্রথম দিকে কঠোর পদক্ষেপের ফলে ওই অবস্হা থেকে কাটিয়ে উঠা গেলেও, পরিকাঠামোগত সমস্যা সহ স্কুলটির অন্যান্য সমস্যা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।
অমরপুর নগর পঞ্চায়েত অফিসের একশো মিটারের মধ্যে অবস্থিত শহরের বনেদি স্কুলটি। স্কুলে শ্রেনীকক্ষ রয়েছে সর্ব সাকুল্যে নয়টি।ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত(একাদশ শ্রেনী বাদে) ওই স্কুলে বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৬৬২ জন। একাদশ শ্রেনীতে এখন ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর একাদশ শ্রেনীতেও ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা একশো ছাড়িয়ে যাবে বলে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক রতন পাল জানিয়েছেন। স্কুলের সব কয়টি শ্রেনীতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্য শতাধিক। দেশের নয়া শিক্ষানীতি অনুয়ায়ী প্রতি চল্লিশ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য একটি শ্রেনী কক্ষের নির্দেশিকা রয়েছে। সেই মোতাবেক ওই স্কুলে কম করেও ১৫ টি শ্রেনী কক্ষের প্রয়োজন।
কিন্তু আছে মাত্র ৯ টি। কবুতরের খাচার মত ছোট্ট ছোট্ট শ্রেনীকক্ষে গাদাগাদি করে ছাত্রছাত্রীদের বসিয়ে পাঠদান করতে হচ্ছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের। পর্যাপ্ত শ্রেনীকক্ষের অভাবে নবম ও দশম শ্রেনীর ছাত্রছাত্রীদের স্কুলেরই একটি পরিত্যক্ত ও ভাঙ্গাচুরা ঘরে বসিয়েই পাঠদান করতে বাধ্য হচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। পৃথক কোন স্কুল গৃহ না থাকায় একাদশ শ্রেনীর ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে ছাত্রছাত্রীদের ওই পরিত্যক্ত নড়বরে ঘরেই পাঠদান করতে হবে। এরমধ্যে স্কুলে নেই ছাত্রছাত্রীদের বসার বেঞ্চ। বর্তমানে স্কুলে ৬৬২ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য বসার বেঞ্চি রয়েছে সর্ব সাকুল্যে ২২০ টি। প্রতি বেঞ্চিতে দুইজন করে বসলেও ওই স্কুলে ৩৩১ টি বেঞ্চির প্রয়োজন। স্বভাবতই শহরের বনেদি স্কুল হিসাবে খ্যাত ডিএটি স্কুলে ফ্লোরে মাদুর কিংবা শতরঞ্জি পেতে ছাত্রছাত্রীদের বসিয়ে পাঠদান করতে হয় শিক্ষক শিক্ষিকাদের। তাছাড়াও রয়েছে শিক্ষকের অভাব। রয়েছে বিজ্ঞান বিষয়ের ল্যাবরেটরি ও সরঞ্জামের অভাব। ডিএটি স্কুলের অভিবাবকদের দাবী অতি দ্রুত শহরের উপর অবস্থিত ওই স্কুলটির শিক্ষক সল্পতা দূরিকরনে, পরিকাঠামোর উন্নয়নে, ছাত্রছাত্রীদের বসার বেঞ্চের সঙ্কট নিরসনে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হস্তক্ষেপ করুক।