প্রিয় পোষ্যের মৃত্যুতে শ্রাদ্ধশান্তি, ব্যান্ডবাজা, খাওয়াদাওয়া!!

 প্রিয় পোষ্যের মৃত্যুতে শ্রাদ্ধশান্তি, ব্যান্ডবাজা, খাওয়াদাওয়া!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

প্রিয় পোষ্যের মৃত্যু প্রত্যেকের কাছেই এক হৃদয়বিদারক ঘটনা । দীর্ঘদিনের সখ্যতার এই সম্পর্কে হঠাৎ ছেদ ঘটলে স্বাভাবিকভাবেই তা হয়ে ওঠে তীব্র মন খারাপের কারণ । শুধু তাই নয় , পোষ্যরাও রীতিমতো বাড়িরই একজন সদস্য হয়ে ওঠে । আর সেই কারণেই তাদের ছেড়ে চলে যাওয়া কাঁদিয়ে দেয় সবাইকে । যদিও , তাদের মৃত্যুর পরেও অকৃত্রিম ভালোবাসায় কোনোরকম ঘাটতি থাকে না । তাই , তো অনেকেই সঠিক নিয়ম মেনে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন পোষ্যদের । ঠিক সেইরকমই এক ঘটনার প্রসঙ্গ এবার সামনে এল । জানা গিয়েছে যে , ওড়িশার পরালেখামুন্ডি গ্রামে পোষ্য সারমেয়র মৃত্যুর পর তার শেষযাত্রায় ব্যান্ড পার্টি থেকে শ্রাদ্ধের আয়োজন করা হয় । যেখানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামের বিপুল সংখ্যক মানুষ । জানা গিয়েছে যে , ওই গ্রামের অত্যন্ত প্রথিতযশা একটি ব্যবসায়ী টুন্নু গুড্ডুর অঞ্জলী নামের কুকুর মারা যায় । আর তার শেষকৃত্যে একেবারে গাড়ি ভাড়া করে সামনে ব্যান্ড পার্টি বাজিয়ে নিথর দেহটি নিয়ে যাওয়া হয় । ঠিক যেভাবে ওড়িশাবাসীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে শোকযাত্রা বের হয় সেই ভাবেই অঞ্জলির শোকযাত্রা বের হল । এমনিতেই নিম্নচাপের জেরে বঙ্গোপসাগরের উপকূল ভাগ ওড়িশায় মাঝেমধ্যেই কখনো জোরে আবার কখনো হালকা বৃষ্টিপাত চলছে । সেই বৃষ্টিকে অগ্রাহ্য করেই মাথায় ছাতা নিয়ে অঞ্জলীর শেষ যাত্রায় পা মেলেন কয়েকশো মানুষ । ওই সারমেয়টিকে যারা পোষ্য হিসেবে রেখেছিলেন সেই পরিবারের সদস্যরা তাকে বেতোয়া নদীতে ভাসিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন । তবে , এখানেই শেষ নয় , বরং ওই কুকুরটির টুন্নু এরপর তার আত্মীয় – স্বজন , পরিচিত ও স্থানীয় লোকজনকে অঞ্জলীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করেন এবং নিয়ম মেনে শ্রাদ্ধের কাজও সম্পন্ন করেন । আর স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে । কিছুদিন আগেই ঝাঁসির পুঞ্চ গ্রামের বাসিন্দা লাখন সিংহ তার পোষ্য সারমেয় কালু মারা গেলে ১৩ দিনে পারলৌকিক ক্রিয়াটলাপ সেরেছিলেন । লালনের মতোই টুন্নুও সমস্ত নিয়ম মেনে অঞ্জলীর শেষকৃত্য সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । আর , বেতোয়ায় দেহ ভাসানোর পরেই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানেরও ব্যবস্থা করেন টুন্নু । এই প্রসঙ্গে টুন্নু আরও জানান যে , ২০০১ সালে অঞ্জলীকে নিয়ে আসেন তিনি । তারপর থেকেই সেখানে থাকত অঞ্জলী । সে থাকাকালীন কোনো চুরি হয়নি এবং বাড়ির নিরাপত্তার জন্য কোনো কর্মচারীকেও নিয়োগ করতে হয়নি। যদিও , টুন্নু জানান , বেশ কয়েকবার চুরির চেষ্টা হলেও অঞ্জলী একাই নস্যাৎ করে দেয় । মৃত্যুর সময়ে তার বয়স ২১ বছর হয়ে গিয়েছিল । এই ২১ বছরে , কোনো নিরাপত্তারক্ষীরও প্রয়োজন হয়নি তাদের । এই কারণেই হঠাৎ করে গুড্ডু পরিবারের বাড়িতে কেউ প্রবেশ করতে পারতেননা । টুন্নু বললেন যে অঞ্জলী ২১ বছর ধরে তাদের সেবা করে এসেছে । এমতাবস্থায় , তার মৃত্যুর পর অঞ্জলীর মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে যেমন শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয় । পাশাপাশি , মানুষের মৃত্যুতে যেমন আচার – অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় তেমনি অঞ্জলীর ক্ষেত্রেও তার কোনো ত্রুটি রাখেননি টুন্নু । ব্যান্ডপার্টি থেকে প্রায় ৫০০ জনের খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয় ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.