রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারী মাসে করার উদ্যোগ!!
মোদির পঞ্চসংকল্প
স্বাধীনতার হীরক জয়ন্তীতে আগামী পঁচিশ বছরের নীল নকশা আঁকলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি । সোমবার দিল্লীর লালকেল্লায় স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি , সেই পঁচিশ বছরকে ‘ অমৃতকাল ’ বলে আখ্যায়িত করলেন । কেননা , আগামী পঁচিশ বছর পর ২০৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন করবে । ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকে সেই অমৃতকালের প্রথম সকাল বলেও আখ্যায়িত করেন মোদি । বলেন , আগামী পঁচিশ বছরের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে ভারত । আর এই লক্ষ্য পূরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী এদিন পাঁচটি সঙ্কল্পের কথা বলেন ।
মোদির সঙ্কল্পগুলি হলো এক বিকশিত ভারত , দুই দাসত্ব থেকে মুক্তি , তিন – উত্তরাধিকার নিয়ে গর্ব , চার – ঐক্যবদ্ধ ভারত , পাঁচ – নাগরিক কর্তব্য । প্রধানমন্ত্রীর মতে , আগামী পঁচিশ বছর এই পঞ্চ সঙ্কল্পের উপর অর্থাৎ এই পাঁচটি বিষয়ের উপর অধিক গুরুত্ব ও নজর দিতে হবে । কারণ , এই পঞ্চসঙ্কল্প পূরণ করেই ২০৪৭ সালে আমাদের স্বাধীনতাপ্রেমীদের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে । প্রথম সঙ্কল্পের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন , উন্নত ভারত গড়তে বিকাশের কাজ আরও জোরদার করতে হবে । পর নির্ভরতা কমিয়ে আত্মনির্ভর ভারতই প্রধান ও প্রথম লক্ষ্য হতে হবে আমাদের । ইতিমধ্যে ভারত সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে ।
উদাহরণ দিতে গিয়ে মোদি বলেন , স্বাধীনতার ৭৫ বছরে এই প্রথম স্বদেশে তৈরি অত্যাধুনিক কামানে একুশবার তোপধ্বনি দেওয়া হয়েছে । মোদির দ্বিতীয় ব্রত দাসত্ব থেকে মুক্তি । দাসত্বের বিন্দুমাত্র অংশ যেন দেশের কোনও প্রান্তে বা কোনায় না থাকে । আমাদের একশ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে যাতে আমরা দাসত্বের চিন্তা ভাবনা ভুলে , দাসত্বের শৃঙ্খল ছিন্ন করে সামনে এগোতে পারি । এই দাসত্বের চিন্তাভাবনা আমাদের শক্ত করে ধরে রেখেছে । দাসত্বের ক্ষুদ্রতম বিষয়গুলি থেকেও আমাদের মুক্তি পেতে হবে ।অমৃতকালে তৃতীয় সঙ্কল্প হলে ঐতিহ্য ও পরম্পরা নিয়ে গর্ব করতে হবে আমাদের । অর্থাৎ উত্তরাধিকার , যা একসময় ভারতকে তার স্বর্ণযুগ দিয়েছিলো
এটি সেই উত্তরাধিকার , যা সময়ের সঙ্গে নতুনকে গ্রহণ করে চলেছে । এই ঐতিহ্য হচ্ছে দেশের চালিকা শক্তি । চতুর্থ ব্রত হলো ঐক্যবদ্ধ ভারত । প্রধানমন্ত্রী বলেন , ভারতের বিবিধতাই ভারতের শক্তি । ভারত গণতন্ত্রের ধাত্রীভূমি । ভারত প্রমাণ করে দিয়েছে , একশ ত্রিশ কোটি ভারতবাসীর কাছে এই অমূল্য ক্ষমতা আছে । পুনচেতনা , পুনর্জাগরণের সময় এসেছে । স্বাধীনতার এত বছর পর গোটা বিশ্ব ভারতকে আজ অন্য চোখে দেখছে । ভারতের কাছে এখন গোটা বিশ্বের অনেক আশা – প্রত্যাশা রাজনৈতিক স্থিরতার কতটা শক্তি , দেশ আজ দেখিয়ে দিয়েছে । দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেশকে উন্নয়নের পথে চলেছে ।
তাই ১৩০ কোটি দেশবাসীর মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে । মোদির পঞ্চম ব্রত হলো নাগরিক কর্তব্য পালন করা । এই কর্তব্যে পালন থেকে প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী কেউ বাইরে নয় । দেশবাসী যদি তাদের কর্তব্যগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকে , গুরুত্ব দিয়ে বিচার করে , আন্তরিকতার সাথে সেই দায়িত্বগুলি পালন করে – তাহলে উন্নত দেশের তালিকায় পৌছেতে ভারতের বেশি দিন লাগবে না ।সব মিলিয়ে স্বাধীনতার হীরক জয়ন্তী বর্ষ উদযাপনের দিন প্রধানমন্ত্রী গোটা দেশবাসী সামনে আগামী ২৫ বছরের ৫ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরলেন , তা নিয়েই এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে । প্রধানমন্ত্রীর মতে – বড় সঙ্কল্প নিয়ে এগোলে স্বপ্ন পূরণ হবেই ।
স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বড় সঙ্কল্প ছিলো বলেই ভারত আজ স্বাধীন রাষ্ট্র । তাই লক্ষ্যে পৌছতে রাজ্যগুলির মধ্যে উন্নয়নের প্রতিযোগিতারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী । শুধু পঞ্চ সঙ্কল্পই নয় । এ দিন প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি ও পরিবার বাদ , ভাই ভাতিজা বাদের বিরুদ্ধে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তিনি । মোদি বলেন , দেশের ক্ষমতাকে সঙ্কুচিত করেছে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি । পরিবারতন্ত্র পরিবারের উন্নতি করতে পারে , দেশের উন্নতি করতে পারে না । তাই দুর্নীতি ও পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও প্রধানমন্ত্রী মোদি দেশবাসীর সমর্থন ও সঙ্গ চেয়েছেন । স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে নারী শক্তির জয়গানও গাইলেন মোদি । ছুঁয়ে গেলেন রাজনীতিকেও ।
প্রধানমন্ত্রীর পঞ্চ সঙ্কল্পকে বিরোধীরা অবশ্য অন্যভাবে ব্যাখ্যা করেছে । বিরোধীদের মতে এই সবই কথার কথা , ‘ চমক ’ । ক্ষমতায় আসার আগেও মোদি দেশবাসীকে অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন । কোনও স্বপ্নই পূরণ করতে পারেননি । উল্টো গোটা দেশবাসী এখন গভীর সঙ্কটে । তাই স্বাধীনতার হীরক জয়ন্তী বর্ষে প্রধানমন্ত্রী মোদি শতবর্ষ উদযাপনের আগে পচিশ বছর যে অমৃতকালের স্বপ্ন দেখালেন , সেই স্বপ্ন বাস্তবে কতটা পূরণ হবে সেটা সময়ই বলবে ।