নির্বাচনের আগে হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ ভারত সফর!!

 নির্বাচনের আগে হাসিনার গুরুত্বপূর্ণ ভারত সফর!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

আগামী বছর বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন। ঘরে বাইরে চাপের মুখে হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার । ক্রমাগত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস অবস্থা বাংলাদেশের । প্রায় আর্থিক মন্দার মুখে বাংলাদেশ । ডলার থেকে টাকার মূল্য রেকর্ড সংখ্যক পতন । পাশাপাশি মৌলবাদী শক্তির আস্ফালনে রাজনৈতিক অস্থিরতা ক্রমশ বাড়ছে । এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৫ সেপ্টেম্বর তিন দিনের ভারত সফরে আসছেন । নির্বাচনের আগে হাসিনার এই ভারত সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া ভারত থেকে খালি হাতে ঢাকা ফিরলে আরো চাপে পড়ে যেতে পারেন হাসিনা ।

যে কারণে হাসিনার থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইতিমধ্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে খবর। ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের খাতিরে চাওয়া পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছে তারা। ঢাকার সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুসারে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত ব্যাপক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে । এই ক্ষেত্রে বড় প্রাপ্তি ঘটতে পারে ঢাকার । প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে ঢাকা নয়াদিল্লির মধ্যে ইতিমধ্যে আধিকারিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু চলছে । মোদি – হাসিনা শীর্ষ পর্যায় বৈঠকের আগে সব চূড়ান্ত করতে চাইছে দুই দেশ । ঢাকার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারতের কাছেও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে ।

চীন বাংলাদেশের উপর প্রভাব খাটাতে চাইছে । এই বিষয়টি নয়াদিল্লির কাছে অস্বস্তির। হাসিনার ভারত সফর আগে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর যথেষ্ট ইঙ্গিত পূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই হাসিনার ভারত সফর ভারতের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে । ব্যবসা বাণিজ্য , বিজ্ঞান প্রযুক্তি , প্রতিরক্ষা বিভিন্ন বিষয়ে নয়াদিল্লি ইতিবাচক উদ্যোগ নিচ্ছে । আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে আরো সুযোগ – সুবিধা দেওয়া জরুরী বলে মনে করছে ভারত। বঙ্গবন্ধুর আমল থেকে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক মধুর । শেখ হাসিনা সে ধারা বজায় রেখেছে । সুপ্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারত বাংলাদেশের ব্যাপারে বরাবরই উদার মানসিকতার পরিচয় দিয়ে আসছে ।

জল নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বিতর্ক রয়েছে বহুদিন ধরে । বাংলাদেশ গঙ্গার জল পেলেও তিস্তা নিয়ে অখুশি । তিস্তার জল পেতে ঢাকা উদগ্রীব । কিন্তু জল মিলছে না । মূলত প্রাদেশিক রাজনীতির আবর্তে আবর্তিত তিস্তা নদীর জল । নীতিগতভাবে বাংলাদেশকে তিস্তার জল দিতে নয়াদিল্লির কোন আপত্তি নেই । কিন্তু মমতা ব্যানার্জির প্রাদেশিক মনোভাব এই ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে । বিষয়টি নিয়ে ঢাকা নয়াদিল্লি অবহিত । কিন্তু বরফ তেমন গলছে না । সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনা পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে চিঠি দিয়েছেন

হাসিনা চাইছে তাঁর ভারত সফরকালে মমতা ব্যানার্জি দিল্লিতে আসুক । আলোচনা করে সমাধান সূত্র যদি পাওয়া যায়। তবে এই সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আঞ্চলিক রাজনৈতিক কারণে মমতার কাছে তিস্তার জলের বিষয়টি সংবেদনশীল । কিন্তু ঢাকার হিসাব অন্যটা । দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক, প্রাদেশিক রাজনীতির জালে আটকে থাকতে পারে না । এই ক্ষেত্রে বৃহত্তম আন্তর্জাতিক স্বার্থ অক্ষুন্ন রাখা জরুরী। তবে এটাও ঠিক যে, তিস্তার জল নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয় । আলাপ আলোচনা করে সমাধান সূত্র বের হবে এমন প্রত্যাশা করে ঢাকা । আলোচনা শুরু হোক । এটা চাইছে ঢাকা । তবে একটা আশার বিষয় হচ্ছে, শেখ হাসিনা ভারতে আসার আগে যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক বসছে ।

ভিস্তার জল নিয়ে ভারতের কাছ থেকে ইতিবাচক বার্তা নিয়ে শেখ হাসিনা ঢাকা ফিরলে সবদিক দিয়ে লাভবান হবে বাংলাদেশ । ২০১৯ সালে শেষ বারের মতো ভারত সফরে এসেছিলেন শেখ হাসিনা । আগামী বছর বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন । শেখ হাসিনার ভারত সফর এই কারণে অন্য মাত্রা পেয়ে গেছে । ভারত- বাংলা সুসম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ । সুপ্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশের ব্যাপারে সব সময় যত্নশীল । নানা কারণে শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফর গুরুত্বপূর্ণ । নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনাকে বিমুখ করবে না। এমন বার্তা ও ইঙ্গিত দুই দেশের তরফে রয়েছে । বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দিনের ভারত সফর উষ্ণতার পরশ থাকবে এটা আগাম বলা যেতে পারে ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.