কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে শাসক!

 কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে শাসক!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

আগামী ২০২৩ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে শুধু রণকৌশল তৈরি করতে বৈঠকের পর বৈঠক করে চলেছে । কখনও রাজ্যে , কখনও দিল্লী , কখনও আবার গুয়াহাটি । রণকৌশল তৈরির বৈঠক চলছেই । সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে গুয়াহাটি । আস্ত বিমান ভাড়া করে রাজ্য নেতাদের গুয়াহাটি উড়িয়ে নেওয়া হলো । যদিও সেই বিমানে সওয়ার হননি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক , প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব । তাদেরকে বাদ দিয়ে তেইশের রণকৌশল তৈরি করা কতটা সঠিক , সেটা বিজেপি নেতৃত্বই – ভালো বুঝবে । সে যাই হোক , যে রণকৌশলই তৈরি হোক না কেন বাস্তবের মাটিতে যে কেউ নেই এবং প্রায় প্রত্যেকেই যে আকাশে উড়ছে , তা কিন্তু হাতেনাতে প্রমাণ সহ একেবারে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে গত ২৯ আগষ্ট খুমুলুঙের জনসভা । দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা প্রথমবারের মতো বিজেপি শাসিত একটি রাজ্যে এসে দলীয় সংগঠনের করুণ চিত্র নিজের চোখেই দেখে গেছেন । শহরে বসে বড় বড় হাঁকডাক দিচ্ছে , অথচ হাজার তো দূরের কথা , এক থেকে দেড়শজন লোক আনারও ক্ষমতা নেই । যার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া গেল নাড্ডার জনসভায় । তারাই সংগঠনের নানা পদ আঁকড়ে বসে আছেন । মাত্র কয়েক হাজার লোকের সামনে দলের সর্বভারতীয় সভাপতিকে সভা করে ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে । বিশেষ করে জনজাতি নেতৃত্ব , যাদের উপর দল ভরসা করেছিলো , তারা পুরোপুরি ব্যর্থ এ নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই । শুধু হাঁকডাক দিয়ে বাস্তব অবস্থাটাকে ঢাকার চেষ্টা করা হচ্ছে । রাজনৈতিক মহলে কিন্তু ভিন্ন চৰ্চা চলছে । রাজনৈতিক মহল কিন্তু বিগত জোট আমলের প্রতিচ্ছবি দেখছে । ১৯৮৮ থেকে ৯৩। চার বছরের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী বদল করা হয়েছিল । ওই বদলের পরও কংগ্রেস দল কিন্তু আর ক্ষমতায় ফিরতে পারেনি আজও । বর্তমান বিজেপি – আইপিএফটি জোট সরকারের আমলেও চার বছরের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী বদল করা হয়েছে , কোনও কারণ স্পষ্ট করা ছাড়াই । কিন্তু সব ছাপিয়ে গত ২৯ আগষ্ট খুমুলুঙের জনসভা যে ইঙ্গিত দিয়ে গেছে , তা কিন্তু শাসক দলের জন্য মোটেও সুখকর নয় । সংগঠনের অবস্থা যে টালমাটাল তা কিন্তু আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে । নেতারা সেই বাস্তব পরিস্থিতিটা উপলব্ধি করতে পারলে ভালো । দল রাজ্যের ক্ষমতায় অথচ পাহাড়ে মার খাচ্ছে বিজেপি কর্মীসমর্থকরা । এটা বোঝার ক্ষমতা যাদের নেই , তারা আবার ক্ষমতায় ফিরে আসার কথা বলছে ! ২০১৮ সালের আগে রাজ্যে বিজেপির ভোট শতাংশ কত ছিলো । সেটা সকলের জানা । ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে একটানা পঁচিশ বছরের বাম সরকারকে পরাজিত করে প্রথম কোনও বামশাসিত রাজ্যে বিজেপির ক্ষমতায় আসার পিছনে ছিলো অবাম ভোটারদের বড় অংশ এবং বাম ভোটারদের একটা অংশের সমর্থন । ২০১৮ সালে বামেদের সাত শতাংশ ভোট গেছে পদ্ম শিবিরে । অন্যদিকে কংগ্রেসের ভোট প্রায় পুরোটাই গেছে গেরুয়া শিবিরে । গত সাড়ে চার বছরে পরিস্থিতি অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না পাহাড় এখন মথার দখলে – এ নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই । সিপিএম এবং কংগ্রেস উভয়েই ঘুরে দাঁড়াবার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে । যে সাত শতাংশ ভোট হারিয়েছিল সিপিএম , সেই হারানো ভোট পুনরায় ফিরে যাবে না – এই গ্যারান্টি কোথায় ? কংগ্রেস পুনরায় শক্তি বৃদ্ধি করছে এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই । বাম কংগ্রেস জোট হোক বা না হোক , তাদের ভোট বাড়লে সেই ভোট কিন্তু শাসক দলের কাছ থেকেই যাবে । ফলে বাস্তব পরিস্থিতি কঠিন । এটা অনুভব করতে না পারলে ডুবতে হবে ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.