ঠাকুরঘরে কে?

 ঠাকুরঘরে কে?
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

গত ২৯ আগষ্ট খুমুলুঙে অনুষ্ঠিত বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার জনসভি সফল হয়েছে।তবে সবাইএকএ বসানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছিল । শুধু তাই নয় , এদিন অত্যধিক গরম ও রোদের কারণে সভাস্থলে বসতে পারেনি । বুধবার কৃষ্ণনগর দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই দাবি করেছেন পূর্ব ত্রিপুরার বিজেপি সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা । সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির মুখ্য প্রবক্তা সুব্রত চক্রবর্তী বলেন , গভীর ষড়যন্ত্র করেও নাড্ডার সভায় মানুষকে আটকে রাখা যায়নি । বিভিন্ন জায়গায় নানা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে অনেকেই শামিল হয়েছিল সভাস্থলে ।

আবার অনেকেই আসতে পারেনি । নানা জায়গায় রাস্তায় আটকে পড়েন , তথাকথিত সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে কথা বলা নেতাদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে । সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা বলেন , নাড্ডার সভায় টার্গেট ছিল পঁচিশ হাজারের বেশি মানুষের । কিন্তু রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে ত্রিশ হাজারেরও বেশি । তবে সবাই আসতে পারেনি । যারা দিল্লীতে গিয়ে সাংবিধানিক অধিকারের কথা বলছেন , যাদের জন্য এই সাংবিধানিক অধিকার । তারাই আটকে পড়েন তথাকথিত দরদিদের গভীর ষড়যন্ত্রে । ইত্যাদি আরও নানা কথা বলেছেন । যুক্তি খাড়া করেছেন । সেই যাই হোক । অত্যন্ত জনপ্রিয় ও প্রচলিত একটি প্রবাদ আছে ।

প্রবাদটি হলো ‘ ঠাকুর ঘরে কে ? আমি তো কলা খাই না ’ । এই প্রবাদের মূল অর্থ সকলেরই কম – বেশি জানা আছে । বিশেষ করে রাজনীতির সাথে যারা যুক্ত আছেন , তারা তো খুব ভালো করেই জানেন । তাই দলের সর্বভারতীয় সভাপতির খুমুলুঙ জনসভা নিয়ে রেবতীবাবুরা যে তত্ত্ব ও যুক্তি খাড়া করে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন , তার সাথে ওই প্রবাদটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে । আসলে তথ্য প্রযুক্তির দৌলতে শুধু রাজ্যবাসীই নয় , গোটা দেশই দেখেছে জে পি নাড্ডাকে খুমুলুঙে জনসভা করতে এসে কী ধরনের অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়েছিল । দেশ তো বটেই , বিশ্বের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের সভাপতিকে মাত্র কয়েক হাজার মানুষের সামনে ভাষণ রাখতে হয়েছে

এ নিয়ে তিনি নিজেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন । শুধু তাই নয় , নাড্ডার সভায় লোক সমাগমের বেহাল অবস্থা দেখে বিভিন্ন মহলেই সমালোচনার ঝড় ওঠে । দলীয় সংগঠনের অবস্থা যে নড়বড়ে হয়ে গেছে , সেই বাস্তব ছবিটাই স্পষ্ট হয়ে ওঠে নাড্ডার সভায় । তীব্র সমালোচনার মুখে একপ্রকার বাধ্য হয়ে রেবতীবাবুরা এখন নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে নানা অজুহাত খাড়া করছেন । শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন । যেসব যুক্তি তুলে ধরছেন , তা ‘ হাস্য কৌতুক ’ ছাড়া আর কিছুই নয় । তর্কের খাতিরে রেবতী এবং সুব্রতবাবুদের বক্তব্যগুলি যদি সঠিক ধরেও নেওয়া হয় , তাহলে তো বলতে হয় আপনাদের মতো নেতাদের এখনই অবসরে যাওয়া উচিত ।

ডাবল ইঞ্জিন সরকারের আমলে , দলের সর্বভারতীয় সভাপতির জনসভায় আসা লোকদের যদি বসাতেই না পারা যায় ? তাহলে এতসব বড় বড় কথা বলে কী লাভ ? কার লাভ ? রাজ্যে প্রথমবারের মতো দুইদিনের সফরে এসেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি । তার সামনে নিজেদের যোগ্যতা কতটা প্রমাণ করতে পারলেন আপনারা ? শুধু সামাজিক মাধ্যমে সভা সমিতিতে হাজির হওয়ার ছবি পোস্ট করে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিলেই যদি সবকিছু হয়ে যেতো , তাহলে মাঠে – ময়দানে , আপদে – বিপদে , সুখ দুঃখে মানুষের পাশে থেকে রাজনীতি করার কী প্রয়োজন ? ২০১৮ সালে প্রবল সরকারবিরোধী হওয়া , পঁচিশ বছরে বাম সরকারের প্রতি মানুষের ক্ষোভ , সেই সাথে মানুষের আবেগ । এই সবগুলির কারণ একসাথে যোগ হওয়াতেই ‘ চলো পাল্টাই ‘ শ্লোগান বাস্তবায়িত হয়েছে । সেই হাওয়াতেই ২০১৯ রাজ্যের দুটি লোকসভা আসনে পদ্মের জয় । ২০২৩ সালে ওইসব কিছুই থাকবে না । ফলে নানা অজুহাত খাড়া করে ব্যর্থতা আড়াল করার প্রয়াসে সাময়িক লাভ হয়তো হবে , কিন্তু দীর্ঘায়িত হবে না । এটাই বাস্তব সত্য ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.