শিক্ষকতা এমন এক পেশা যেখান থেকে সব পেশার সৃষ্টি হয়ঃ রতন

 শিক্ষকতা এমন এক পেশা যেখান থেকে সব পেশার সৃষ্টি হয়ঃ রতন
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি, বিলোনীয়া।। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তুলতে শিক্ষকদের সহযোগিতা চাইলেন শিক্ষা মন্ত্রী। শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা তৈরি করতে শিক্ষক সমাজ, প্রতিবেশী, সমাজবদ্ধ সকলের মিলিত প্রয়াস জরুরি। একমাত্র ‘স্যার’ উপাধি পাওয়া আপনারাই। ছাত্র-ছাত্রীদের পূর্ণতা বিকাশের কারিগর আপনারাই। শিক্ষকতা এমন একটি পেশা যেখান থেকে সব পেশার সৃষ্টি হয়। শিক্ষকরাই তৈরি করে দেয় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন পেশায় যোগ্য ব্যক্তিদের। ছাত্র-ছাত্রী অর্থাৎ ছেলে-মেয়েদের মেধা রয়েছে। আপনারাই পারেন তাদের মানুষের মত মানুষ করে তুলতে। সব সময় পজেটিভ চিন্তা ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমি আপনাদের সম্মান করি। শ্রদ্ধা জানাই। রাজ্য শিক্ষা ব্যবস্থায় গত সাড়ে চার বছরে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ভারতবর্ষের কোনও রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার মান কতটুকু তা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ত্রিপুরা ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে প্রথম অবস্থানে। উপরিউক্ত কথাগুলি রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী রতনলাল নাথের। রবিবার তিনি বিলোনিয়া সফরে আসেন। এদিন দুপুরে বিলোনিয়া পুরাতন টাউন হলে বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চের উদ্যোগে দক্ষিণ জেলা ভিত্তিক ‘শিক্ষক সম্মাননা’ অনুষ্ঠান হয়। এর উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। বক্তব্যে তিনি শিক্ষক শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে উপরোক্ত কথাগুলি বলেন। এদিন তিনি বক্তব্যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ, স্বামী বিবেকানন্দ, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালাম, নেলসন ম্যান্ডেলা সহ বিশিষ্ট মহান ব্যক্তিত্বরা, শিক্ষক সমাজের প্রতি যেসব কথা বলেছেন তারও উল্লেখ করেন। বললেন, আগামী দিনে ভারতবর্ষের ভবিষ্যৎ, রাজ্যের ভবিষ্যৎ কোথায় তা ঠিক করবে ছাত্র-ছাত্রীরা। বিবেকানন্দের কথা উল্লেখ করে বলেন, হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীদের সাথে শিক্ষকদের মিশে যেতে হবে। তাদের চোখ দিয়ে দেখতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের কান দিয়ে শুনতে হবে। বুঝতে হবে ওদের চিন্তা চেতনা দিয়ে। অনুভব করতে হবে। তবেই তিনি প্রকৃত শিক্ষক। বললেন, আমি উপদেশ দিচ্ছি না। জন্ম- মৃত্যু আমাদের হাতে থাকে না। খালি হাতে আসা। খালি হাতে যাওয়া। কিন্তু এই দুইয়ের মাঝখানে যে সময় তা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক শিক্ষা দিতে পারলেই ওরা সঠিকভাবে এগিয়ে যেতে পারে ।এপিজে আব্দুল কালাম বলেছেন, একটা দেশকে দুর্নীতিমুক্ত গড়ে তুলতে, সুন্দর দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে তিনজন মানুষের গুরুত্ব অনেক বেশি। তারা মা, বাবা এবং শিক্ষক। আর কেউ নয়। শিক্ষা হচ্ছে এমনই অস্ত্র যার মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে পরিবর্তন করা সম্ভব। বলেছেন নেলসন ম্যান্ডেলা। শিক্ষা মন্ত্রী তারও উল্লেখ করেন। একজন গুড টিচার হচ্ছে একটা ক্যান্ডেল। যার আলোতে ছেলেরা মেয়েরা পথ দেখে। এদিন বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী গত সাড়ে চার বছরে রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তনের উল্লেখ করে তা তুলে ধরেন । এন সি ই আর টি সিলেবাস চালু থেকে শুরু করে বৃত্তিমূলক শিক্ষা, প্রি প্রাইমারি স্কুল চালু, সব স্কুলে সেন্ট্রালাইজড কোয়েশ্চেন চালু, মেধা অন্বেষণ ,বছর বাঁচাও, বিদ্যাজোতি, ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত, স্মার্ট ক্লাস, ডিজিটাল লাইব্রেরী, সুপার থার্টি, ইত্যাদি উল্লেখ করেন। রাজ্যে ন্যাশনাল ফরেন্সিক সায়েন্স ইউনিভার্সিটি চালুর কথা উল্লেখ করেন। বিভিন্ন কলেজে বাংলা ও ইংরেজিতে এম এ পড়াশুনা সুযোগ তৈরির কথা এদিন তিনি বক্তব্যে বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন সবচেয়ে বড় শিক্ষক হচ্ছে ‘মা’। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিলোনিয়ার সন্তোষ নাথ সহ গত দুই বছরে দক্ষিণ জেলা থেকে রাজ্যপাল পুরস্কারপ্রাপ্ত এমন আরো ২০ জন শিক্ষককে সম্মান জানানো হয়। এছাড়া দক্ষিণ জেলা থেকে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম সম্ভাব্য ১০ এ স্থান করে নেওয়া ছাত্র-ছাত্রীদেরও সংবর্ধনা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, এম এম সি এর দক্ষিণ জেলা কনভেনার সুভাষ দাস। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চের রাজ্য কমিটির সদস্য দেবাশীষ রায়, গৌতম মজুমদার, বিলোনিয়া পুর পরিষদের চেয়ারম্যান নিখিল চন্দ্র গোপ সমাজসেবী গৌতম সরকার ও আরো অন্যান্যরা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.