নির্বাচন স্থগিত রাখার ইস্যুতে বিশেষ সাধারণ সভাই ভন্ডুল

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

নজিরবিহীন ঘটনা ত্রিপুরা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে । রবিবার টিসিএর নির্বাচন সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে ডাকা বিশেষ সাধারণ সভা কোনপ্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়াই মাঝপথে ভণ্ডুল হয়ে যায় । টিসিএর ৫৪ বছরের ইতিহাসে অতীতে এ ধরনের ঘটনা আদৌ ঘটেছে কিনা এ নিয়েই এখন রাজ্যের ক্রিকেট মহলে প্রশ্ন । প্রাপ্ত সংবাদে প্রকাশ , ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মানিক সাহা , তিমির চন্দরা টিসিএর দায়িত্ব নেওয়ার পর টিসিএর সংবিধান অনুযায়ী আগামী পনেরো সেপ্টেম্বর পর্যন্তই টিসিএর বর্তমান কমিটির মেয়াদ । কিন্তু টিসিএর বর্তমান কমিটি টিসিএর সংবিধানকে একপ্রকার বুড়ো আঙুল দেখিয়েই নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন এড়ানোর উদ্যোগ নেয় । গত ত্রিশ আগষ্ট টিসিএর যুগ্ম সচিব কাম ইনচার্জ সচিব এক নোটিশ জারি করে সদস্যদের জানান যে , আগামী এগারো সেপ্টেম্বর বেলা বারোটায় এমবিবি স্টেডিয়ামের ক্লাব হাউসে এক বিশেষ সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে ।

bcci-1641601185-1641601185

সভার একমাত্র অ্যাজেন্ডা হলো শীর্ষ আদালতে বিসিসিআইর দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে টিসিএর নির্বাচন এবং বার্ষিক সাধারণ সভা স্থগিত রাখা । ( Withholding of Annual General Meeting and Election of Tripura Cricket Association in view of pending case in the Hon’ble Supreme Court preferred by the BCCI linking the BCCI and the State Cricket Associations . ) কিন্তু ঘটনা হচ্ছে , টিসিএর যে সংবিধান তাতে কোনও ভাবেই পনেরো সেপ্টেম্বরের পর টিসিএর বর্তমান কমিটির একদিনের জন্যও ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই , যদি না এ প্রসঙ্গে আদালতের কোন নির্দেশ টিসিএকে দেওয়া হয় । জানা গেছে , রবিবার নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধ ঘন্টা পর বিশেষ সাধারণ সভার কাজ শুরু করেন টিসিএ সভাপতি তপন কুমার লোধ ।

শুরুতেই তিনি বলেন , বিসিসিআইর তরফে কুলিং অফ নিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা হওয়ার পর বিসিসিআই তার নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে এবং টিসিএও তার নির্বাচন ও বার্ষিক সাধারণ সভা স্থগিত রাখতে চাইছে । সভাপতির এই বক্তব্য শোনার পরই সহ সভাপতি সহ কয়েকজন সদস্য জানতে চান যে , টিসিএকে কি তার নির্ধারিত নির্বাচন পিছিয়ে দিতে বিসিসিআই কোন নির্দেশ বা চিঠি দিয়েছে ? সভাপতি নাকি জানান , এ নিয়ে হোর্ডের কোন চিঠি বা লিখিত নির্দেশ নেই । তখনই সদস্যরা সভাপতিকে চেপে ধরেন । এই সময় যুগ্ম সচিব নাকি বলেন যে , বিসিসিআই থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে টিসিএর নির্বাচন পিছিয়ে দিতে বলা হয়েছে । তখন সদস্যরা যুগ্ম সচিবকে চেপে ধরেন । তারা বলেন , তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে আমরা কথা বলব । ইতিমধ্যে যুগ্মসচিব নাকি সভা থেকে বের হয়ে কাকে কাকে ফোন করেন ।

এর মধ্যে নাকি মুখ্যমন্ত্রীর একটি ফোন আসে টিসিএর এক কর্তার কাছে । মুখ্যমন্ত্রী নাকি বলেন , এভাবে হৈচৈ করা ঠিক হচ্ছে না । প্রয়োজনে মিটিং আজকের জন্য বাতিল করা হোক । এরপরই সহ – সভাপতি যুগ্মসচিবকে চেপে ধরেন । তিনি বলেন , কেন আপনি টিসিএর ইস্যু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করলেন এবং আমাদের কেন তা না জানিয়ে । সভা তখন একপ্রকার উত্তপ্ত । যুগ্ম সচিবকে সবাই সাঁড়াশি আক্রমণ করেন । পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে , সভাপতি দ্রুত এদিনের মতো বৈঠক স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হন । আলোচনা হয় সদস্যরা সবাই দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রীর সাথে । কোন যুক্তিতে টিসিএতে সময়মতো নির্বাচন করা থেকে সভাপতি ও যুগ্ম সচিব পালিয়ে যেতে চাইছেন তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইবেন । জানা গেছে , আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টিসিএর ভবিষ্যৎ নিয়ে হয়তো কোন সিদ্ধান্ত হবে । বৈঠকশেষে সদস্যরা বলেন , আজ যা হলো তা কলঙ্ক । সভাপতি ও যুগ্ম সচিব যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীর ইমেজ খারাপ করলেন তা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না । টিসিএর কোন সমস্যা থাকলে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ নিতে পারি আমরা । কিন্তু বৈঠকে বসে মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে সদস্যদের নামে মিথ্যা অভিযোগ এবং মুখ্যমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা একটা কলঙ্ক । এদিকে , আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে , পনেরো সেপ্টেম্বরের পর কোন ভাবেই টিসিএতে বর্তমান কমিটি এক মিনিটের জন্য হলেও টিসিএর ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই । টিসিএর সংবিধান যা , তাতে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে পনেরো সেপ্টেম্বর । সুতরাং আদালতের কোন নির্দেশ বা হস্তক্ষেপ ছাড়া ষোল সেপ্টেম্বর থেকে টিসিএ এক প্রকার অভিভাবকহীন হয়ে যাবে- দাবি আইনি বিশেষজ্ঞদের ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.