বেতন বৃদ্ধির তিন মাসের মধ্যেই বর্ধিত বেতন কমানোর নির্দেশ

 বেতন বৃদ্ধির তিন মাসের মধ্যেই বর্ধিত বেতন কমানোর নির্দেশ
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাজ্য সরকারের অর্থ দপ্তরের এক সিদ্ধান্তের ফলে জেলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির তিন মাসের মাথায় বর্ধিত বেতন কমানো সহ গত তিন মাসের বৃদ্ধি করা রিকোভারি করার অর্ডারে কর্মচারীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে । স্টেট রিসোর্স সেন্টারের জারি করা রাজ্য সরকারের অর্থ দপ্তরের অনুমোদন অনুসারে বেতন U.O. NO.33 / FIN ( EXPDT – II ) 2022 dated 29.04.2022 তৎকালীন স্টেট রিসোর্স সেন্টারের মেম্বার সেক্রেটারি ডা . রজত দেববর্মা গত জুন মাসের ৪ তারিখ ( VOL NO – F.28 / SRC / 2014 III ) 2734-47 এই মেমোরেণ্ডাম মূলে উত্তর , ধলাই , দক্ষিণ ও পশ্চিম জেলার জেলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের কর্মচারীদের ১৫ শতাংশ বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধি করেছিলেন । গত ১২ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করে পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলিতে বর্তমান স্টেট রিসোর্স সেন্টারের মেম্বার সেক্রেটারি ডা . দীপ্তি বিকাশ রায় আরেকটি মেমোরেণ্ডাম পাঠান বর্ধিত ইনক্রিমেন্ট বাতিল সহ গত তিন মাসের বর্ধিত ইনক্রিমেন্ট রিকোভারি করার জন্য । যার নম্বর NO F.28 / SRC / 2014 ( VOL ) / 2843 55. জানা গেছে , রাজ্যের সব কয়টি জেলা পুনর্বাসন কেন্দ্রের নিজস্ব ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজমেন্ট টিম রয়েছে । রাজ্যের চারটি জেলা পুনর্বাসন কেন্দ্রের কো – অর্ডিনেশন রক্ষা করার দায়িত্বভার হচ্ছে স্টেট রিসোর্স সেন্টারের । যার বর্তমানে মেম্বার সেক্রেটারি হচ্ছেন ডা . দীপ্তি বিকাশ রায় । জানা গেছে , ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাজ্যের চারটি পুনর্বাসন কেন্দ্রের কর্মচারীদের আলাদা আলাদা বেতন পরিকাঠামো ছিল । পরবর্তী সময় রাজ্যস্তরে একই বেতন পরিকাঠামো গঠন করার লক্ষ্যে F.28 / SRC / 2014 / VOL – III ) / 11-24 যার তারিখ ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারী মেমোরেণ্ডাম ইস্যু করেন । এই মূলে রাজ্যের সবকয়টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে এক বেতন পরিকাঠামো তৈরি করা হয় । তখন সব কয়টি পুনর্বাসন কেন্দ্র স্টেট রিসোর্স সেন্টারের জারি করা আদেশ লাগু করেছিল । কিন্তু ১৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে স্টেট রিসোর্স সেন্টারের মেম্বার সেক্রেটারি নিজ অদক্ষতার কারণে রাজ্যের তিনটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করতে পারলেও পশ্চিম জেলার কর্মচারীরা বঞ্চিত রয়ে যায় । তবে পশ্চিম জেলায় বর্ধিত ইনক্রিমেন্ট কেন কার্যকর হয়নি তা জানা যায়নি । এর উত্তর একমাত্র স্টেট রিসোর্স সেন্টারের মেম্বার সেক্রেটারির কাছে রয়েছে । কিন্তু হঠাৎ করে ১২ সেপ্টেম্বর কর্মচারীদের বর্ধিত বেতন কমানোর আদেশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্টেট রিসোর্স সেন্টারের ভূমিকা ও যিনি বর্তমানে দায়িত্বে আছেন তিনি আদৌ এই পদের যোগ্য কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । উল্লেখ্য , স্টেট রিসোর্স সেন্টার যদি প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলির কো অর্ডিনেটিং অথরিটি হয়ে থাকে তাহলে পশ্চিম জেলায় এই মেমোরেণ্ডাম কেন লাগু করতে পারলেন না । পশ্চিম জেলায় এই মেমোরেণ্ডাম চালু না হওয়ার জন্য বাকি তিন জেলাও বর্তমানে বঞ্চিত হতে চলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে । স্টেট রিসোর্স সেন্টার একটি স্বশাসিত বডি । তাই এ ব্যাাপরে অর্থ দপ্তরের হস্তক্ষেপ কতটা যুক্তিসঙ্গত তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে । স্টেট রিসোর্স সেন্টারের বর্তমান মেম্বার সেক্রেটারি নিজের এক্তিয়ার সম্পর্কে কতটা অবগত আছেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আগামী দিনে স্টেট রিসোর্স সেন্টারের আদেশ কতটুকু পালন করবেন তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে । স্টেট রিসোর্স সেন্টার ও অর্থ দপ্তর নিজেরাই নিজেদের করা আদেশকে তিন মাস পর বাতিল ঘোষণা করেছে । জানা গেছে , ২০১৮ সালের আগে যে বেতন পরিকাঠামো ছিল , নিজ নিজ জেলায় সেভাবে করে দিলেও কর্মচারী ও ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির মধ্যে এভাবে বিভ্রান্তি ছড়াবে না । তবে এর পেছনে সরকারকে ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিককে হেয় করার কোনও চক্রান্ত রয়েছে কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে । উল্লেখ্য , ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে স্টেট রিসোর্স সেন্টারের এক আদেশ অনুসারে রাজ্যের সব কয়টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে বাৎসরিক ১৫ শতাংশ বেতনভাতা বৃদ্ধির আদেশ জারি করেছিলেন । কিন্তু সেই অর্ডারটিও একমাস পর বাতিল ঘোষণা করা হয়েছিল । জানা গেছে এভাবেই প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের কর্মচারীদের সঙ্গে ছেলেখেলা চলছে । রাজ্যের সব কয়টি জেলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের কর্মচারীরা হচ্ছেন অনিয়মিত । তাদের বেতনও স্বল্প । পুজোর প্রাক্কালে এভাবে বর্ধিত বেতন রিকোভারি করার অর্ডার আসায় কর্মচারীরা হতভম্ব হয়ে পড়েছেন । যিনি এই অর্ডার জারি করেছেন তিনি রাজ্য সরকারের নিয়মিত কর্মচারী ছিলেন । অবসরগ্রহণ করার পর স্টেট রিসোর্স সেন্টারের মেম্বার সেক্রেটারি হন । শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে এ ধরনের সিদ্ধান্তে তার বিরুদ্ধে কর্মচারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন । জানা গেছে , স্টেট রিসোর্স সেন্টার ও ফাইনান্স ডিপার্টমেন্ট যদি অবিলম্বে এই জারি করা অর্ডার বাতিল না করে তাহলে কর্মচারীরা আইনের দ্বারস্থ হবেন ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.