মিড-ডে-মিলে দুর্নীতি!!!
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি,অমরপুর।।মিড-ডে-মিল প্রকল্পে ছাত্রছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ ডিমেও ভাগ বসাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং জনৈক অতি রামভক্ত শিক্ষকের প্রচ্ছন্ন মদতে মিড-ডে-মিল প্রকল্পের ইনচার্জ ছাত্রছাত্রীদের অনিয়মিত মিড-ডে-মিল খাওয়ানো নিয়ে দুর্নীতির সাথে জড়িত।
অমরপুর মহকুমা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অধীনস্থ কাউয়ামারা ঘাট স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের জন্য মিড-ডে-মিল প্রকল্পে বরাদ্দ ডিমে গত একবছর ধরেই ভাগ বসিয়ে আসছেন ওই স্কুলের কতিপয় গুনধর শিক্ষক মশাইরা। অভিযোগ এমনটাই।
মহকুমার গ্রামাঞ্চলের মধ্যে গুনগত মানের পঠনপাঠন হয়ে থাকে বলে কাউয়ামারা ঘাট স্কুলের বেশ সুনাম রয়েছে। ওই স্কুলে ২২৮ জন ছাত্রছাত্রী পঠনপাঠন করে। কিন্তু শ্রেনী কক্ষের অভাবে বিগত বেশ কয়েক মাস যাবতই ওই স্কুলে সপ্তাহে তিনদিন করে পালা করে পঠন-পাঠনের কাজ চলছে । প্রতি সপ্তাহের সোম, বুধ ও শুক্রবারে সপ্তম এবং নবম শ্রনীর পঠন-পাঠন হয় স্কুলে। আর মঙ্গল বৃহস্পতি ও শনিবার ষষ্ঠ এবং অষ্টম শ্রেনীর পঠনপাঠন হয়ে থাকে ।
মিড-ডে-মিল প্রকল্পে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ সপ্তাহে দুইদিন, মাসে আটদিন ছাত্রছাত্রীদের ডিম খাওয়ানো নির্দেশ থাকলেও, প্রতিমাসে দুই/তিন দিনের বেশি ডিম খাওয়ানো হয়না বলে অভিযোগ। ডিমের পরিবর্তে ছাত্রছাত্রীদের হাতে বিস্কুট,কেক ইত্যাদি খাবার ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার ওই স্কুলে গিয়ে অভিযোগের একশ শতাংশ সত্যতা পাওয়া গেছে। নিয়ম অনুযায়ি বৃহস্পতিবার ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ডিম ভাত খাওয়ানোর কথা থাকলেও সেদিন স্কুলের মিড-ডে-মিলে রান্না হয়েছে নিরামিষ সব্জি।
এই বিষয়ে স্কুলের মিড-ডে-মিল প্রকল্পের ইনচার্জ আব্দুল রব গাজির নিকট জানতে চাইলে তিনি এর কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। ইনচার্জকে চেপে ধরার পর তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শীলা চন্দ্র উঁচুইয়ের নির্দেশেই তিনি ওই নিয়ম বহির্ভূত কাজ করে আসছেন। কিন্ত গত বৃহস্পতিবার স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিলাচন্দ্র উঁচুই স্কুলে অনুপস্থিত থাকায় প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, কাউয়ামারা ঘাট স্কুলে দীর্ঘদিন ধরেই বহু দুর্নীতি এবং নানান অপকর্ম চলে আসছে বলে অভিবাবকদের এবং এলাকাবাসীদের অভিযোগ। অভিযোগ, স্কুল ফান্ডের দুই লক্ষ টাকা কি কাজে ব্যয় হয়েছে তার কোন হিসেব স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। অভিযোগ, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য মিড-ডে-মিলের বরাদ্দ ডিমে ভাগ বসানো থেকে শুরু করে নানান দুর্নীতির সাথে প্রকল্পের ইনচার্জের সাথে প্রধান শিক্ষক শিলাচন্দ্র উঁচুইও সমানভাবে জড়িত। সমগ্র বিষয়টির তদন্ত দাবী করেছেন সংশ্লিষ্ট অভিবাবকরা।
সমগ্র বিষয়টি নিয়ে অমরপুরের বিদ্যালয় পরিদর্শকের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিদর্শক দশরথ দেববর্মা জানান, তিনি বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এখন দেখার বিষয় ছাত্রছাত্রীদের মিড-ডে-মিলের ডিমে ভাগ বসানো স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এবং সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির বিষয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শক কি ব্যবস্থা নেন। আর সে দিকেই তাকিয়ে আছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।