আরও ৩ মাস বিনামূল্যে রেশন
কেন্দ্রীয় কর্মী এবং ৮০ কোটি গরিব মানুষ। উভয়ের জন্যই এলো সুখবর। উৎসবের মরশুমে সুসংবাদ দিয়ে আজ ঘোষণা করা হলো কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মী ও পেনশনারদের জন্য আরও এক কিস্তি মহার্ঘ ভাতা। চার শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হয়েছে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনীতি বিষয়ক কমিটির বৈঠকের পর। পয়লা জুলাই থেকে কার্যকর হবে এই ডিএ। আসন্ন অক্টোবর মাসেই পাওয়া যাবে বর্ধিত কিস্তির বকেয়া অর্থ। অর্থাৎ জুলাই থেকে বকেয়া ডিএ যুক্ত হবে মূল বেতনের সঙ্গে। কেন্দ্রীয় কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৪৯ লক্ষ। কেন্দ্রীয় অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৬২ লক্ষ। এই বিপুল সংখ্যক কর্মী ও অবসরপ্রাপ্তদের জন্য নতুন করে চার শতাংশ ডিএ যুক্ত হওয়ায় মোট ডিএ হলো ৩৮ শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধির হারের সঙ্গে ডিএ বৃদ্ধির হার যুক্ত হয়। লাগাতার ছয় শতাংশের উপর তো বটেই আগষ্ট মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার পৌঁছেছে সাত শতাংশে। তার আগেও মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.৮ শতাংশ স্পর্শ করেছে। সুতরাং, জুলাই মাস থেকে বকেয়া ডিএ যে চার শতাংশই হতে চলেছে, সেই নিশ্চয়তা আগেই ছিল।
নতুন করে চার শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ফলে এক বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের ১২ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। চলতি আর্থিক বছরের নয় মাসের জন্য খরচ হবে ৮৫৬৮ কোটি টাকা। কেন্দ্ৰীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর জানিয়েছেন, একই সঙ্গে এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনাকেও ফের বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তিন মাসের জন্য। এই নিয়ে সপ্তমবার বাড়ানো হলো এই প্রকল্পের মেয়াদ। করোনাকালে ২০২০ সালে চালু করা হয়েছিল গরিব কল্যাণ যোজনা। গরিব মানুষকে বিনামূল্যে চাল গম দেওয়ার প্রকল্প আরও কতদিন চালানো হবে সেই প্রশ্ন উঠছিল। বিশেষ করে অর্থমন্ত্রক এবং খাদ্য বিপণন মন্ত্রকের মধ্যে ছিল টানাপোড়েন। অর্থমন্ত্রক চাইছে এবার যেহেতু জীবিকা, অর্থনীতি অনেকটাই স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে, তাই গরিব কল্যাণ যোজনা বন্ধ করে দেওয়া হোক । কিন্তু দেখা যাচ্ছে সরকার এখনই এই প্রকল্প বন্ধ করার পক্ষপাতী নয় ৷
কারণ অবশ্যই কিছুটা রাজনৈতিক। আগামী এক বছরের মধ্যে একের পর এক রাজ্যে রয়েছে বিধানসভার ভোট। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ঘোষণা করা হবে গুজরাটের ভোট। তারপর হিমাচলপ্রদেশের ভোট আসছে। আগামী বছর আট রাজ্যের ভোট। সুতরাং ৮০ কোটি মানুষের জন্য বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়ার প্রকল্প বন্ধ করা হলে বিরোধীদের পক্ষ থেকে সরকারকে আক্রমণ করা হতে পারে। তাই আপাতত আরও তিনমাসের জন্য বৃদ্ধি করা হয়েছে গরিব কল্যাণ যোজনা। এই তিন মাসের বৃদ্ধির কারণে ৪৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে রাজকোষ থেকে। মোট সব মিলিয়ে খরচের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লক্ষ ৯১ হাজার কোটি টাকা।