দুর্গাপুজো ঘিরে ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে, জানাল বণিকসমাজ

 দুর্গাপুজো ঘিরে ৫০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে, জানাল বণিকসমাজ
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

বাংলার দুর্গাপুজো শুধুমাত্র এক মিলন উৎসব নয়, বরং তা লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও। এই পুজোকে কেন্দ্র করেই বাংলার বুকে যে আর্থিক কর্মকাণ্ড ডানা মেলে তা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিবছরই আড়েভারে বেড়ে চলেছে। এখন সেই পুজোর অর্থনীতিই চমকে দিচ্ছে দেশের তাবড় তাবড় অর্থনীতিবিদদের।

একটি পুজোকে কেন্দ্র করে যে ভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্য, লেনদেন হচ্ছে তা বিশ্বের যে কোনও দেশের অর্থনীতিকে টেক্কা দিয়ে দেবে বলে মত অর্থনীতিবিদদের। ।কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে এবার ছিল পূর্ণদমের বিধিহীন পুজো। সেই পুজোয় বাংলার বুকে সর্ব অর্থনীতি কতটা অক্সিজেন পায়, সেই “অ্যাসো দিকেই তাকিয়ে ছিলেন বাংলার তথা
দেশের অর্থনীতিবিদরা। সেই সূত্রেই প্রাথমিক হিসাব বলছে, ২০২২ সালের দুর্গাপুজোকে ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্য ও আর্থিক লেনদেনের সীমা ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে।

সর্বভারতীয় বণিকসভা ‘অ্যাসোচাম’ ২০১৩ সালে বাংলার দুর্গাপুজোর ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল । তারা জানিয়েছিল, ২৫ হাজার কোটি টাকার দুর্গাপুজোর ব্যবসা প্রতি বছরে ৩৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। সেই যুক্তিতে এখন তা ৭০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছনোর কথা। কোভিডের কারণে সেই বুদ্ধি কিছুটা থমকালেও, চলতি বছরের পুজোতে দুর্গাপুজোর ওপর একটি সমীক্ষা ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে গিয়েছে। সেই হিসাব উঠে এসেছে নানা সমীক্ষার মাধ্যমে। অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের তরফে ২০১৯ সালে একটি সমীক্ষা চালায় ব্রিটিশ কাউন্সিল। সংস্থাটি জানায়, এখানে দুর্গাপুজো কেন্দ্রিক ব্যবসা হয় ৩৩ হাজার কোটি টাকার। ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের কর্মকর্তারাও জানাচ্ছেন, কলকাতা তথা রাজ্যের পুজো এবং তার সঙ্গে যুক্ত সামগ্রিক বাজারের করা হয় হিসেব কষলে, তা সাধারণত ৪০ য়েছিল, টাকা ছাড়িয়ে যায়। এবার সেই অঙ্কই ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার হিসাবটা আসছে কোথা থেকে? সরকারি পরিসংখ্যান বলছে চলতি বছরের পুজোয় পশ্চিমবঙ্গজুড়ে প্রায় তিন লক্ষ মানুষের রুটি রুজির জায়গা করে দিয়েছে বাংলার সেরা পার্বণ। এবার
পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৪৫ হাজার পুজো হয়েছে। তার মধ্যে ৪ হাজারের বেশি পুজো হয়েছে কলকাতা ও শহরতলির বুকে। সেই সব পুজোয় স্পনসনরশিপ , বাবদ এসেছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। রাজ্য সরকারও পুজো কমিটিগুলিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে। পরপর দু’বছর কোভিডের কারণে নমো নমো করে আয়োজন করা হয় পুজোর।

শুধু প্রতিমা বা প্যান্ডেল নয়, পুজোর সঙ্গে যুক্ত সবরকমের ব্যবসা মার খেয়েছিল সেই সময়। কিন্তু এবার সেই না-পাওয়াকে যেন কড়ায়গণ্ডায় উশুল করেছে সাধারণ মানুষ। তার প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়। জামাকাপড়, জুতো ও অন্যান্য পোশাক সরঞ্জাম, খুচরো বাজার, হোটেল, রেস্তরাঁ, তিন পরিবহণ, সিনেমা ও অন্যান্য বিনোদন, পণ্যের প্রচার, বিপণনসহ সর্বস্তরেই এবার ভালো ব্যবসা হয়েছে এবার।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.