ত্রিপুরা সফরে আপ্লুত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু
দৈনিক সংবাদ অনলাইনঃ পূর্ব ঘোষিত সূচি অনুযায়ী বুধবার প্রথমবারের মতো রাজ্যে এসে পৌঁছোলেন দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এদিন সকাল ১১ টা ২ মিনিটে আগরতলা বিমানবন্দরে এসে অবতরণ করেন তিনি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান রাজ্যপাল সত্যদেব নারায়ণ আর্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড. মানিক সাহা, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। বিমানবন্দরেই রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। এই প্রথম রাজ্যের মহিলা পুলিশ ও মহিলা টিএসআর বাহিনী রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেয়।
এরপরেই বিমানবন্দর থেকে সরাসরি চলে যান নড়সিংগড়। সেখানে তিনি ত্রিপুরা স্টেট জুডিশিয়াল একাডেমি উদ্বোধনের পাশাপাশি ত্রিপুরা জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহা, শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ সহ অন্যান্যরা। এরপর সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এবং স্থানীয় বিধায়ক কৃষ্ণধন দাসের সঙ্গে চলে যান দূর্গাবাড়ি চা বাগানে। সেখানে তিনি চা বাগান এবং চা প্রক্রিয়াকরণ কারখানার মহিলা শ্রমিকদের সাথে মত বিনিময় করেন এবং তাদের শিশুদের বিশের করে মেয়েদের শিক্ষার দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।
এরপর বিকাল ৩.৩০ মিনিটে উপস্থিত হন রবীন্দ্রভবনের ১ নং প্রেক্ষাগৃহে। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড.মানিক সাহা, উপমুখ্যমন্ত্রী যিষ্ণু দেব্বর্মন, শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ, বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, রাজ্য কৃষি ও পর্যটন দপ্তরের মন্ত্রী প্রণজিত সিংহ রায় সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। এদিন রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে রাষ্ট্রপতি ভার্চুয়ালি আবাসের উদ্বোধন করেন এবং বোতাম টিমে অন্যান্য ৭ টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। পূর্ত দপ্তরের তত্ত্বাবধানে ক্যাপিটাল কম্পলেক্সে ৩৯৮৩.০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিধায়ক আবাসটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই আবাস নির্মাণে ব্যয় হয়েছে মোট ৫২.১৫ কোটি টাকা।
এতে রয়েছে ৪৫ টি স্যুট, লাইব্রেরি, জিমন্যাসিয়াম হল, মিটিং হল, ওয়েটিং হল। বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহা। এছাড়াও এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রোপদী মুর্মু বলেন, ভারত পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠেছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এই দেশকে ৫ ট্রিলিয়ন অর্থনীতিতে পরিণত করতে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি আরও বলেন যে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা রয়েছে, যার উন্নয়নে তার মতে, মহাসড়ক, রেলপথ, আকাশপথ ও নৌপথের বিভিন্ন নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন গতি পাচ্ছে।
এদিন রাষ্ট্রপতি বলেন, উদ্বোধন করা এই প্রকল্পগুলি শুধুমাত্র ত্রিপুরায় যোগাযোগ, শিক্ষা, বিচার বিভাগ এবং আইনসভাকে শক্তিশালী করবে না বরং রাজ্যের সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকেও বাড়য়ে তুলবে। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি এটা জেনে আনন্দিত যে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রক, ত্রিপুরা সরকারের সাথে মিলে ‘বিদ্যা-জ্যোতি মিশন’ চালু করেছে। যার অধীনে ১০০টি বিদ্যমান উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহ মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা হয়েছে। রবীন্দ্রভবনের কর্মসূচি শেষ করার পর সেখান থেকে চলে যান রাজধানীর লিচুবাগানস্থিত এলবার্ট এক্কা পার্কে।
সেখানে তিনি শহীদবেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শহীদ বীর সেনানীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় আগরতলা টাউনহলে পুর নিগমের পক্ষ থেকে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা, উপ মুখ্যমন্ত্রীর যীষ্ণু দেববর্মা , মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব ও মেয়র দীপক মজুমদার।