লাফিয়ে বাড়ল খুচরো মুদ্রাস্ফীতি

 লাফিয়ে বাড়ল খুচরো মুদ্রাস্ফীতি
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

খুচরো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির আঁচ আবার ঊর্ধ্বমুখী। সম্ভাবনা ছিলই। কারণ সেপ্টেম্বর মাসের পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগামী প্রবণতা লক্ষ্য করে অর্থনৈতিক মহলের পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হয়েছিল যে, ৭.২ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে মূল্যবৃদ্ধির হার। সরকারী পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসের খুচরো পণ্যের ক্ষেত্রে ৭.৪ শতাংশ হয়েছে মূল্যবৃদ্ধির হার। আর অন্যদিকে শিল্পোৎপাদন হার কমেছে ০.৮ শতাংশ। প্রসঙ্গত, এই শিল্পোৎপাদন হার আগষ্টে বেড়েছিল ১৩ শতাংশ। শিল্পোৎপাদন সেক্টরের মধ্যে আবার উৎপাদন ক্ষেত্রেই বিশেষ নৈরাশ্যজনক ফল। ০.৭ শতাংশ কমেছে ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর। খনিজ উৎপাদন যথেষ্ট উদ্বেগজনকভাবে কমেছে। প্রায় চার শতাংশ। সব মিলিয়ে আগষ্টে খুচরো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল সাত শতাংশ। তার আগে জুলাই মাসে কমে হয়েছিল ৬.৬ শতাংশ। আশা করা হয়েছিল মে মাস থেকে যেহেতু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক লাগাতার দফায় দফায় বাড়িয়েছে রেপো রেট, তাই সম্ভবত এবার কমতে শুরু করবে মুদ্রাস্ফীতির হার। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের লক্ষ্য মূল্যবৃদ্ধির হারকে ছয় শতাংশের নীচে নিয়ে আসা। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মনে করে দুই থেকে ছয় শতাংশের মধ্যেই যদি ধরে রাখা যায় মূল্যবৃদ্ধির হারকে, তাহলে একমাত্র সম্ভব অর্থনীতির গতিবৃদ্ধি করা। আর তাই মরিয়া হয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কখনও ৪০ বেসিস পয়েন্ট, কখনও আবার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে রেপো রেট। লক্ষ্য মূল্যবৃদ্ধির হার কমানো। বস্তুত এভাবে রেপো রেট বাড়িয়ে চলার কারণে পক্ষান্তরে সাধারণ মানুষের উপর ব্যাঙ্ক ঋণের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। কারণ রেপো রেট বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রতিনিয়ত ব্যাঙ্ক ঋণের উপর সুদের পরিমাণও বেড়ে চলেছে। ফলে সাধারণ মানুষ বাড়ি ও গাড়ির জন্য যে ঋণ নিয়েছে ব্যাঙ্ক থেকে, এবার ক্রমেই সেই ঋণ পরিশোধের জন্য মাসিক কিস্তির ব্যয় বেড়ে চলেছে। সুতরাং মূল্যবৃদ্ধির হার এবং ব্যাঙ্ক ঋণের বৃদ্ধি দুই-ই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। সেপ্টেম্বর মাসের মূল্যবৃদ্ধির হারের পরিসংখ্যান পাওয়ার পর এবার অপেক্ষা আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের জিডিপি বৃদ্ধিহার কত হবে সেটা জানা। আগামী মাসে এই পরিসংখ্যান জানা যাবে। সম্প্রতি একের পর এক আর্থিক সংস্থা ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ভারতের চলতি আর্থিক বছরের জিডিপি বৃদ্ধিহার পূর্বঘোষিত পূর্বাভাসের তুলনায় কম হবে বলে জানিয়েছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার এবং বিশ্বব্যাঙ্ক সকলেই বলেছে, ৬.৫ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ হবে জিডিপি বৃদ্ধিহার। আমেরিকা সফরে যাওয়া কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আজ এই অঙ্কই ঘোষণা করেছেন আর্থিক বছরের জিডিপি বৃদ্ধিহার হিসেবে। তিনি বলেছেন, সাত শতাংশের মতো হবে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধিহার। যা বিশ্বজুড়ে শুরু হওয়া মন্দার নিরিখে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.