বিচ্ছিন্নতা-হতাশায় প্রলাপ বকছে বিজেপিঃ জিতেন
শাসকদল বিজেপির ২৩-এর নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত। শুক্রবার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে সিপিএমের জনসমাবেশে রাজ্যের মানুষের উপস্থিতিই তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। এই কারণেই পরাজয় নিশ্চিত জেনেই শাসকদল বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রের নেতারা হতাশাগ্রস্ত আতঙ্কগ্রস্ত। এ দিন বিজেপির রাজ্য কার্যালয়ে সহ সভাপতি অশোক সিনহি এক সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রমাণ করে দিলেন এরা পুরোপুরি জনবিচ্ছিন্ন। আর মাএ কয়েক মাস,এরপর এদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না । তাই ডাক্তারবাবু সহ বিজেপি নেতাদের রাতে ঘুম নেই, পায়ের নিচের মাটি পর্যন্ত নেই। শনিবার মেলারমাঠে দলের রাজ্য কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই বললেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন চৌধুরী। তিনি বলেন, বিজেপি দল সম্পাদক জিতেন চৌধুরী। তিনি বলেন, গতকালের জনঢল দেখে বিজেপি নেতৃত্বর মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।তিনি বলেন,বিজেপি দল থেকে সিপিএম কে ভারতীয় সংস্কৃতি পাঠ নিতে হবে না । কারণ বিজেপি দলের ভারতীয় সংস্কৃতি মানে গণতন্ত্রের হত্যা, সংবিধান ধ্বংস করা, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা, বিরোধী দলের রাজনৈতিক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া, হামলা, হুজ্জতি, লুটপাট। এটা হল বিজেপি দলের সংস্কৃতি। তাই বিজেপি দলের ধর্মনিরপেক্ষতার পাঠ দিতে হবে না। মোদি সরকারের সময় দেশের অর্থনীতির খাদের কিনারায় এসেছে। ই, তাই সিতারাম ইয়েচুরি যা বলেছেন সবই সঠিক এবং সত্য। হিটলার মুসোলিনির কাছ থেকে পাঠ নিয়ে চলা আরএসএস পরিচালিত বিজেপির কাছ থেকে এ ধরনের অসত্য বক্তব্য ছাড়া আর কি পাবে মানুষ। এরপরও এরা বলছে নির্লজ্জের মতো রাষ্ট্রবাদ। বিজেপির জানা উচিত কমিউনিস্ট সমস্ত ধর্মকে শ্রদ্ধা করে। কিন্তু এরপরও অমাবস্যার চাঁদের মতো এসে এক সহ-সভাপতি বিজেপি রাজ্য কার্যালয়ে বসে মায়াকান্না করলেন।
জিতেন চৌধুরী এ দিন আবারও বলেছেন, সিপিএমের মূল শত্রু বিজেপি। সিপিএম অন্য কোনও দলের বিরুদ্ধে নয়। তাই বিজেপিকে রাজ্য থেকে উৎখাত করতে তিনি সব ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। নির্বাচনে জোট হবে কিনা এটা পরের বিষয়। আগে রাজ্যে ভোটদানের জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তাই গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে সিপিএম। তার অভিযোগ, বিজেপি দলের নগ্ন সন্ত্রাসের চেহারা শুক্রবার আরও একবার প্রত্যক্ষ করলেন রাজ্যবাসী। চরম দুর্নীতিবাজ, স্বৈরাচারি, জনবিচ্ছিন্ন দল তাদের পাপকে আড়াল করতে এবং সিপিএমের সভাকে বানচাল করতে সর্বোচ্চ প্রয়াস করেছে। কিন্তু এদের বাধা গুড়িয়ে মানুষ সমাবেশে এসে প্রমাণ করে দিলে বিজেপির বিদায় নিশ্চিত। রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমা থেকে হাজার হাজার মানুষকে এরা জনসভায় আসতে দিল না। গোটা দক্ষিণ জেলা, সাব্রুম, বিলোনীয়া, শান্তিরবাজার অঘোষিত ধর্মঘট ছিল বিজেপির গুণ্ডাবাহিনীর। ডেমো ট্রেনের বগি কমিয়ে দিল। উত্তর ত্রিপুরা, উনকোটি, ধলাই, দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে আগত ৫৭টি বাসকে মাঝপথে আটকে রাখে শাসক দল। রেলস্টেশন থেকে কোনও ছোট গাড়িকে চলতে দিল না। এরপর হাজার হাজার মানুষ নিজেনিকে উৎখাত করতে ফ্লাইওভার দিয়ো হেঁকে মাঠে এলেন। গোমতী জেলা, সিপাহিজলা, জিরানীয়া থেকে গাড়ি নিয়ে মানুষকে আসতে দিল না। চড়িলামে রাস্তা আটকে দিল। করবুক, শিলাছড়ি, জোলাইবাড়ি, শান্তিরবাজার, অমরপুরে পর্যন্ত এরা হামলা করেছে। দলের প্রায় সত্তরজন কর্মী সমর্থকদের আহত করা হয়েছে। জনসভা ফিরত নিরিহ মানুষকে এরা আহত করেছে।
তবে এসব করে মানুষ এবং সিপিএমকে আর রোখা যাবে না। এই ঘটনাগুলির পেছন থেকে নেতৃত্ব দিলেন রাজ্যের এক মহিলা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সহ রাজ্য নেতৃত্বরা। যা রাজ্যের জনো লজ্জা। জিরানীয়াতে গতকাল রাতে নয়টি বাড়িতে ব্যাপক হামলা করেছে বিজেপির সমাজদ্রোহীরা। তবে রাজ্যের মানুষ এখন বিজেপির অপশাসন থেকে মুক্তির জন্য রাজপথে নেমেছেন। এই দু:শাসনের সরকারকে পাল্টাতে তৈরি রয়েছেন। তিনি এ দিনও সকলকে রাজপথে নামার আহ্বান জানান।
জিতেন চৌধুরী বলেন, রাজ্যে এক মন্ত্রী তার পুত্রের অপরাধকে আড়াল করার চেষ্টায় বাস্ত। যদিও তিনি সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েছেন। কিন্তু এরপরও যা চলছে তাতে রাজ্যে মহিলা-মা-বোনদের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে। অথচ এরাই মহিলা সংরক্ষণের কথা বলছেন। যা এদের মুখে মানায় না। এই ঘটনাগুলির ক্ষেত্রে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণের জন্যও তিনি আবেদন জানান।