জিম্বাবোয়েকে হারিয়ে সেমি ফাইনালে ভারত, প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড
রবিবাসরীয় ম্যাচে মাঠে নামার আগেই
সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল
ভারতীয় ক্রিকেট দলের। তবে ভারত কিন্তু কোনও ঝুঁকি নেয়নি। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে পারফরম্যান্সের ধারাবািহকতা বজায় রেখেই তােদর উড়িয়ে দিল ভারত। ৭১ রানে জিতে গ্রুপ শীর্ষেথেকে শেষ করল মেন ইন ব্লু। ব্যাট হাতে কে এল রাহুল ও সূর্যকুমার যাদবের দাপট সেমি ফাইনালের ম্যাচে নামার আগে ভারতীয় দলের উপড়ি পাওনা। নেদারল্যান্ডসের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার হারের পরই সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল রোহিতদের। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ভারতের ম্যাচ ছিল শুধুই নিয়মরক্ষার। আর সেই ম্যাচেই টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন রোহিত শর্মা। ব্যাট হাতে অবশ্য এদিনও ব্যর্থহন ভারতীয় অধিনায়ক। ১৩ বলে মাত্র ১৫ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। আগের ম্যাচে রান পেয়েছিলেন কে এল রাহুল। এদিনও ঝকঝকে হাফ সেঞ্চুরি করেন ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক। বিরাট কোহলির সঙ্গে ৬০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন রাহুল। লোকেশ রাহুল ৫১ রান করেন। সূর্যকুমার যাদব করেন ৬১ রান। মিডল অর্ডারে তিনি যে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন তা এদিন আবার প্রমাণ করলেন তিনি। তার ঝোড়ো ব্যাটিং ভারতকে বড় রানে পৌঁছে দেয়। স্কাইয়ের দাপটেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রান তোলে ভারত। ভারতের ১৮৬ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় পেসারদের সামনে দিশেহারা হয়ে পড়েন জিম্বাবোয়ের ব্যাটাররা। প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন ভুবনেশ্বর কুমার। দ্বিতীয় ওভারে উইকেট নেন অর্শদীপ সিং। উইকেট নেওয়ার তালিকায় যোগ হয় মহম্মদ শামি, হার্দিক পান্ডিয়ার নামও। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকার ফলে একেবারেই পার্টনারশিপ গড়তে পারেননি জিম্বাবোয়ে ব্যাটাররা। প্রথম ১০ ওভারের মধ্যেই ৫ উইকেট হারায় জিম্বাবোয়ে। এর মধ্যে দু’টি উইকেট নেন মহম্মদ শামি। একটি উইকেট নেন হার্দিক পান্ডিয়া। সেখান থেকে রিয়ান বার্ল এবং সিকান্দর রাজা ৬০ রানের জুটি গড়েন। সেই জুটি ভেঙে দেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ২২ বলে ৩৫ রান করে বোল্ড হন বার্ল। শেষে অক্ষর প্যাটেল, তেন্দাই চাতারাকে প্যাভিলিয়নে ফেরাতেই হাজার হাজার দর্শকের উল্লাসে ফেটে পড়েছিল এমসিজি। ভারতীয় বোলারদের দাপটে ১১৫ রানেই অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবোয়ে। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ভারতকে। পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বিধ্বস্ত
হয়ে আরব আমিরশাহী থেকে ফিরে
আসতে হয় তােদর। চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই পাকিস্তানকে হারানোর পরে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ভারতকে। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হার ছাড়া মোটের উপর ভালই পারফরম্যান্স করে ভারত। তারপর থেকে লাগাতার ম্যাচ জিতে নিয়ে শেষ চারে নিজেদের জায়গা পাকা করে ফেলে মেন ইন ব্লু। অন্যদিকে চোকার্স’ তকমা আর ঘুচল না দক্ষিণ আফ্রিকার । খাতায়-কলমে দুর্বল নেদারল্যান্ডসের কাছে ১৩ রানে হেরেই প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিল টেম্বা বাভুমার দল। এদিন প্ৰথমে ব্যাট করে নেদারল্যান্ডস। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫৮ রান তুলে দেয় ডাচরা। কলিন আ্যকারম্যান সর্বাধিক ২৬ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৪৫ রানেই থেমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্রেন্ডন গ্লোভার মাত্র ৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপে ভাঙন ধরান। ফ্রেড ক্লাসেন ও বাস ডেই লিড দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। এই প্রথমবার বিশ্বকাপের মঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ইতিহাস লিখল নেদারল্যান্ডস। ১৯৯২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা ছিটকে গিয়েছিল। এরপর ১৯৯৯-তেও শেষ চার থেকে বিদায়। ২০০৩ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায়তেই থামতে হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এরপর ২০১১ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে হার। ২০১৫ বিশ্বকাপের শেষ চারেও একই অবস্থা হয়েছিল। প্রোটিয়াদের হারে সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছিল পািকস্তান দলের। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল বাংলাদেশও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পািকস্তানই শেষ হাসি হাসল। শাকিব আল হাসানের দলকে হারিয়ে প্রতিযোগিতার শেষ চারে চলে গেলেন বাবর আজ়মরা। বাংলাদেশের ৮ উইকেটে ১২৭ রানের জবাবে ১১ বল বাকি থাকতেই পাকিস্তান তুলল ৫ উইকেটে ১২৮ রান। গ্রুপ পর্বের প্রথম দুটি ম্যাচ হেরে সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্নে জোর ধাক্কা খেয়েছিলেন বাবর আজমরা। জটিল অঙ্কের বিচারে টিকে ছিল শেষ চারের লড়াইয়ে। প্রতিদিনই পাল্টেছে সেই হিসেব। অনেক কাটাছেঁড়া ও পরপর তিন ম্যাচ জিতে অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখাল পাকিস্তান। ভারত ও জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে শেষ বলে হেরে বিশ্বকাপে ধুঁকছিলেন বাবররা। শেষ চারে যাওয়ার জন্য তখন তাদের নির্ভর করতে হচ্ছিল অন্য দলের ওপর। তবে রানরেট ভাল থাকায় সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন বেঁচে ছিল। মেগা রবিবারে সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হল। নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দিতেই সেমি যাওয়ার পথ আরও চওড়া হয় পাকিস্তানের কাছে।