আইজিএমে অস্থি রোগ ও শল্য বিভাগের পরিষেবা মুখ থুবরে!!

 আইজিএমে অস্থি রোগ ও শল্য বিভাগের পরিষেবা মুখ থুবরে!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাজধানী শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত স্টেট রেফারেল হাসপাতাল আইজিএমের সব বিভাগে এখনও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে উঠেনি। শতবর্ষের বেশি পুরানো ভিএম এসে হাসপাতাল নাম পরিবর্তনে আইজিএম হাসপাতাল হিসাবে পরিচিত। এই হাসপাতালে পরিকাঠামোর অভাবে অর্থোপেডিক্স রোগ বিভাগ, শল্য অর্থাৎ সার্জারি বিভাগ, জরুরি বিভাগের সঙ্গে যুক্ত ক্যাজুয়েলিটি ব্লক— এসব গুরুত্বপূর্ণ রোগ বিভাগগুলি প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর অভাবে রোগীর সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে না বলে রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজন অভিযোগ তুলেছেন। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিকাঠামো না থাকায় রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে জিবি হাসপাতালে ছুটে যেতে হচ্ছে ।হাসপাতাল থেকেও রোগীকে জিবিতে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে বলে রোগী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। অর্থোপেডিক্স অর্থাৎ অস্থি বিভাগ শুধুমাত্র নামে হাসপাতাল খাতাই চালু রয়েছে। অস্থি বিভাগের রোগীর জন্য নেই অন্ত: বিভাগ অর্থাৎ ওয়ার্ড। রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসাপর্ব চালানোর জন্য ওয়ার্ড না চালু থাকায় হাড় ভাঙা রোগীদের চিকিৎসার জন্য জিবি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আইজিএমে হাড় ভাঙা রোগীদের জন্য শুধুমাত্র আউটডোর তথা বহির্বিভাগ চালু রয়েছে। বহির্বিভাগে রোগী দেখার জন্য হাসপাতালে নামমাত্র শুধু একজন অস্থি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন । তাছাড়া অস্থি রোগ বহির্বিভাগে সেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে সাহায্য করার জন্য একজন এমবিবিএস ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ রয়েছে। স্টেট রেফারেল হাসপাতাল নামধারী আইজিএমে অস্থিরোগ চিকিৎসা পরিষেবায় এই বেহালদশায় রোগীরা হাসপাতালে এসে প্রচণ্ড বিপাকে পড়ছেন। বহির্বিভাগে চিকিৎসক দেখানোর পর চিকিৎসক রোগীর শারীরিক অবস্থার গুরুত্ব বুঝে হাসপাতালে ভর্তির জন্য প্রেসক্রিপশন লিখে দিচ্ছেন। কিন্তু আইজিএমে হাড় ভাঙা রোগীদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কোনও পরিকাঠামো না থাকায় জিবিতে রোগীকে ছুটে যেতে হচ্ছে। খুব কষ্টে রোগীকে রোগীর জিবিতে ছুটে যেতে হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, স্টেস্ট রেফারেল এত বড় ও এত পুরানো হাসপাতালে কেন অস্থিরোগ বিভাগের জন্য এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে উঠেনি। প্রসঙ্গত, জিবি হাসপাতালকে যখন ২০০৫ সালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, সেই সময় ২০০৬-২০০৭ সালে আইজিএমে হাড় ভাঙা রোগীদের জন্য অস্থি বিভাগ পুরো পরিকাঠামো নিয়েই চালু করা হয়েছিল।অনেকজন অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও সেই সময় রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা দিতে বহির্বিভাগ তথা আউটডোর অন্ত: বিভাগ তথা ইনডোরে কর্মরত ছিলেন। হাড় ভাঙা রোগীরাও শহরের প্রাণকেন্দ্রে আইজিএমে এই চিকিৎসা পরিষেবায় ভালো সুবিধা পেতো। কিন্তু তিন-সাড়ে তিন বছর আইজিএমে অস্থি রোগের এই ধরনের চিকিৎসা পরিকাঠামো চালু থাকার পর আচমকায় তৎকালীন বাম সরকার আইজিএম থেকে অস্থি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক একে একে তুলে নিয়ে কাউকে টিএমসি হাসপাতালে আবার কাউকে জিবি হাসপাতালে পোস্টিং দেয়। তাতে ২০১০ সালের পরই আইজিএমের অস্থি রোগ বিভাগকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে নেয়। তারপরই আইজিএমে এসে হাড় ভাঙা রোগীরা চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে বঞ্চিত হতে শুরু করে। জিবি হাসপাতালে রোগীকে ছুটে যেতে হচ্ছে। চিকিৎসা পরিষেবার সেইসব বেহাল দশা আর হাসপাতালে দূর হয়নি। বহাল রয়েছে সেই বেহাল দশা । রবিবার হাসপাতালের সুপার ডা. শর্মিষ্ঠা সরকারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল অস্থি রোগ বিভাগের চিকিৎসা পরিকাঠামোর বেহাল দশার কবে অবসান ঘটবে। সুপার জানান, অস্থি রোগ বিভাগে রোগী ভর্তি রাখার সুবিধা চালু করে পরিকাঠামোর উন্নতি করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রোগীর অপারেশন করার জন্যও পরিকাঠামোর সুব্যবস্থা করা হবে। তবে অস্থি রোগ বিশেষজ্ঞ আরও চিকিৎসক লাগবে। চিকিৎসক পাওয়া গেলে সঙ্গে অন্যান্য প্রয়োজনীয় এমবিবিএস ডাক্তার, নার্স, জিডিএ পাওয়া গেলেই অস্থি রোগ অন্ত: তথা ইনডোর বিভাগ চালু করে দেওয়া হবে বলেও হাসপাতাল সুপার ডা. সরকার জানান । এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য দপ্তর সব ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছে বলেও তিনি জানান। হাসপাতালের শল্য চিকিৎসা বিভাগ ও ক্যাজুয়েলিটি ব্লকের চিকিৎসা পরিকাঠামোও আও উন্নতি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.