জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় রেড অ্যালার্ট জারি বাংলাদেশে
জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় সারা বাংলাদেশে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশের সব আদালত এবং সরকারী স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।গত রবিবার ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে একদল জঙ্গি হামলা চালিয়ে পুলিশের কাছ থেকে ২ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার পর সারাদেশে সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন মহলে আতঙ্ক দেখা দেওয়ার পর নিরাপত্তা জোরদার এবং রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়।পলাতক এই দুই জঙ্গি যাতে করে দেশ থেকে পালাতে না পারে এই জন্য ত্রিপুরার বাংলাদেশ অংশের সীমান্তজুড়ে সতর্ক রাখা হয়েছে সীমারক্ষীদের। পুলিশও নজর রাখছে নিজ নিজ এলাকায়। আখাউড়া চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন বিভাগকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। জঙ্গিদের কালো তালিকাভুক্ত করে ইমিগ্রেশনে তাদের ছবি পাঠানো হয়েছে।আখাউড়া ইমিগ্রেশনের আধিকারিক দেওয়ান মুরশেদুল হক দৈনিক সংবাদকে বলেছেন, ওই দুই জঙ্গি কালো তালিকাভুক্ত।কোনওভাবেই যেন তারা দেশ ত্যাগ করতে না পরে এই জন্য বাড়তি সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগে একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৪ জঙ্গিকে ঢাকার আদালতে হাজির করার পর জেলা হাজতে ফিরিয়ে নেওয়ার সময় কয়েকজন জঙ্গি অতর্কিতে হামলা চালিয়ে পুলিশকে কাবু করে ফেলে। এরপর ৪ জঙ্গির মধ্যে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় জঙ্গিদলটি।এভাবে ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে হামলা করে জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরপরই সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়।পুলিশের সব গোয়েন্দা সংস্থা এখন পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের ধরতে সারাদেশে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে পুলিশ জানতে পেরেছে, শীর্ষ জঙ্গি নেতা, সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের নির্দেশে জঙ্গিরা পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী দুটি মোটর সাইকেলে অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন সদস্য অবস্থান নেয়।এছাড়া আরও ১০/১২ জন জঙ্গি আদালতের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করে।এরপর তারা পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা বাধা দিলে আসামিদের একজন লোহা কাটার যন্ত্র দিয়ে একজন কনস্টেবলের মুখে আঘাত করে। এদিকে, আদালত পাড়া থেকে পালিয়ে যাওয়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিরা পুলিশের নজরদারির মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশিদ। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করে বলেন,যে কোনও মুহূর্তে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। ঘটনার পর থেকে পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। আমরা সব জায়গায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা প্রত্যেকটি পয়েন্টকে সতর্ক করে দিয়েছি।জঙ্গিরা যাতে সীমান্ত পাড়ি দিতে না পারে,তারা যাতে কোনওভাবে বের হতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছ।ছিনতাই হওয়া দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।এদিকে,আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।বিষয়টি তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।জঙ্গি আসামিদের ছিনিয়ে নিতে দুটি মোটরসাইকেলে এসেছিল সহযোগীরা।তাড়াহুড়ো করে পালানোর সময় একটি মোটর সাইকেল ফেলেই চলে যায় জঙ্গিরা।জানা গেছে, ঢাকা মেট্রো-ল-৩১- ৫৭১০নম্বরের ওই মোটর সাইকেলটির মালিক হাসান আল মামুন নামে এক যুবক।তিনি পুরান ঢাকার বাসিন্দা।তাকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।